আল-ফিকহুল আকবর ইমাম আবূ হানীফা ও আল-ফিকহুল আকবার ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি

বর্তমান যুগেও সৌদি আরব ও অন্যান্য দেশে অন্যান্য মাযহাব ও মতের অনেক মুহাদ্দিস তাঁকে হাদীস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন। আমরা ইতোপূর্বে এরূপ দু-একটি বক্তব্য দেখেছি। পাশাপাশি কোনো কোনো মুহাদ্দিস ইমাম আবূ হানীফাকে দুর্বল বলে প্রমাণ করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। এদের অন্যতম বর্তমান যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস আল্লামা শাইখ মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রাহ)। তিনি ইমাম আবূ হানীফাকে হাদীস বর্ণনায় দুর্বল বলে গণ্য করেছেন। তিনি প্রমাণ হিসেবে ইতোপূর্বে উদ্ধৃত ইবনুল মুবারাক, ইমাম আহমদ, বুখারী, নাসায়ী, ইবন হিব্বান, ইবন আদী প্রমুখের বক্তব্য উল্লেখ করেছেন।[1]

শাইখ আলবানী (রাহ)-এর বক্তব্যে আমরা দুটি বিষয় লক্ষ্য করি:

(১) তিনি বলেছেন যে, ইমাম আযমের সত্যবাদিতা, ফিকহী মর্যাদা ও তাকওয়া সন্দেহাতীত ও প্রশ্নাতীত, তবে তিনি হাদীস মুখস্থ রাখায় দুর্বল ছিলেন। কিন্তু তিনি তাঁর মতের পক্ষে যাদের বক্তব্য উদ্ধৃত করেছেন: ইমাম আহমদ, বুখারী, ইবন হিব্বান, ইবন আদী প্রমুখ তাঁকে শুধু হাদীসে দুর্বল বলেন নি, বরং তাঁরা তাঁকে হাদীসে, ফিকহে, আকীদায়, ঈমানে, ইসলামে, তাকওয়ায়, সত্যবাদিতায়- সর্বদিক দিয়ে দুর্বল বলেছেন এবং কেউ কেউ তাঁকে ইসলামের শত্রু বলে উল্লেখ করেছেন। আমরা জানি না, তিনি তাঁদের কিছু কথা গ্রহণ এবং বাকি মত বাতিল করলেন কেন? ইমাম আবূ হানীফার বিরুদ্ধে তাঁদের এ সকল বক্তব্য যদি বিদ্বেষপ্রসূত বলে তাঁর নিকট প্রমাণিত হয় তাহলে ইলম হাদীসের মূলনীতি অনুসারে তাঁর হাদীসের দুর্বলতার বিষয়েও তাঁদের মত অগ্রহণযোগ্য। আর যদি তিনি মনে করেন যে, তাঁদের মতগুলো ইনসাফভিত্তিক তাহলে তো পুরোটাই গ্রহণ করা জরুরী ছিল।

(২) ইমাম আবূ হানীফার গ্রহণযোগ্যতার পক্ষে শু’বা, কাত্তান, ইবন মাহদী, ইবন মায়ীন ও দ্বিতীয় শতকের অন্যান্য মুহাদ্দিসের বক্তব্য পর্যালোচনা করেন নি।

শাইখ আলবানীর এ মত তাঁর অনেক পাঠক ও ভক্তকে প্রভাবিত করছে।

[1] আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদীসিয যায়ীফাহ ১/৬৬০-৬৬৭।