কিতাবুত তাওহীদ ১ হতে ৬৭ তম অধ্যায় মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব ১ টি
৪২ - আল্ল­াহ তাআলার সাথে কাউকে শরিক না করা

১। আল্ল­াহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

فَلَا تَجْعَلُوا لِلَّهِ أَنْدَادًا وَأَنْتُمْ تَعْلَمُونَ ﴿البقرة:22﴾

‘‘অতএব জেনে শুনে তোমরা আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করো না।’’

২। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে আববাস রা. বলেন أنداد [আন্দাদ] হচ্ছে এমন শিরক যা অন্ধকার রাত্রে নির্মল কাল পাথরের উপর পিপিলিকার পদচারণার চেয়েও সুক্ষ্ম। এর উদাহরণ হচ্ছে, তোমার এ কথা বলা, ‘আল্লাহর কসম এবং হে অমুক, তোমার জীবনের কসম, আমার জীবনের কসম।’ ‘যদি ছোট্ট কুকুরটি না থাকতো, তাহলে অবশ্যই আমাদের ঘরে চোর প্রবেশ করতো।’ ‘হাঁসটি যদি ঘরে না থাকতো, তাহলে অবশ্যই চোর আসতো।’ কোন ব্যক্তি তার সাথীকে এ কথা বলা,

‘আল্ল­াহ তাআলা এবং তুমি যা ইচ্ছা করেছো।’ কোন ব্যক্তির এ কথা বলা, ‘আল্ল­াহ এবং অমুক ব্যক্তি যদি না থাকে, তাহলে অমুক ব্যক্তিকে এ কাজে রেখো না।’ এগুলো সবই শিরক। (ইবনে আবি হাতেম)

৩। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল­াম এরশাদ করেছেন,

من حلف بغير الله فقد كفر أو أشرك (رواه الترمذى وحسنه وصححه الحاكم)

‘‘যে ব্যক্তি গাইরুল­াহর নামে শপথ করলো, সে কুফরী অথবা শিরক করলো।’’ (তিরমিজি)

৪। ইবনে মাসউদ রা. বলেছেন,

لأن أخلف بالله كاذبا أحب إلي من أحلف بغيره صادقا

‘‘ আল্ল­াহর নামে মিথ্যা কসম করা আমার কাছে গাইরুল­াহর নামে সত্য কসম করার চেয়ে বেশী পছন্দনীয়। হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল­াম এরশাদ করেছেন,

لا تقولوا: ماشاء الله وشاء فلان ولكن قولوأ ماشاء الله ثم شاء فلان (رواه أبوداد)

‘আল্ল­াহ এবং অমুক ব্যক্তি যা চেয়েছেন’ এ কথা তোমরা বলো না। বরং এ কথা বলো, ‘আল্ল­াহ যা চেয়েছেন অতঃপর অমুক ব্যক্তি যা চেয়েছে’ (আবু দাউদ)

ইবরাহীম নখয়ী থেকে এ কথা বর্নিত আছে যে, أعوذبالله وبك অর্থাৎ ‘আমি আল্ল­াহ এবং আপনার কাছে আশ্রয় চাই’ এ কথা বলা তিনি অপছন্দ করতেন। আর أعوذ بالله ثم بك অর্থাৎ ‘আমি আল্ল­াহর কাছে আশ্রয় চাই অতঃপর আপনার কাছে আশ্রয় চাই।’ এ কথা বলা তিনি জায়েম মনে করতেন। তিনি আরো বলেন, لولا الله ثم فلان ‘যদি আল্ল­াহ অতঃপর অমুক না হয়’ একথা বলে, কিন্তু لولا الله وفلان অর্থাৎ ‘যদি আল্ল­াহ এবং অমুক না হয়’ এ কথা বলো না।

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় .

১। আল্ল­াহর সাথে শরিক করা সংক্রান্ত সূরা বাকারার উল্লেখিত আয়াতের তাফসীর।

২। শিরকে আকবার অর্থাৎ বড় শিরকের ব্যাপারে নাযিলকৃত আয়াতকে সাহাবায়ে কেরাম ছোট শিরকের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য বলে তাফসীর করেছেন।

৩। গাইরুল­াহর নামে কসম করা শিরক।

৪। গাইরুল­াহর নামে সত্য কসম করা, আল্লাহর নামে মিথ্যা কসম করার চেয়েও জঘন্য গুনাহ।

৫। বাক্যস্থিত و এবং ثم এর মধ্যে পার্থক্য।