এ দিনগুলোতে সাধারণ ঘটে যাওয়া কিছু বিদআত ও ভুল ভ্রান্তি

এ দিনগুলোতে সাধারণ ঘটে যাওয়া কিছু বিদআত ও ভুল ভ্রান্তি থেকে সকলের সতর্ক থাকা জরুরী: যেমন:

১. সম্মিলিত তাকবীর বলা: এক আওয়াজে অথবা একজনের বলার পর সকলে সমস্বরে বলা থেকে বিরত থাকা।

২. ঈদের দিন হারাম-নিষিদ্ধ কর্মে লিপ্ত হওয়া: গান শোনা, ফিল্ম দেখা, বেগানা নারী-পুরুষের সাথে মেলামেশা করা ইত্যাদি পরিত্যাগ করা।

৩. কুরবানির পশু যবেহ করার পূর্বে চুল, নখ ইত্যাদি কর্তন করা: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানি দাতাকে যিলহজ মাসের আরম্ভ থেকে কুরবানি করা পর্যন্ত তা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন।

৪. ঈদের দিনে কবর যিয়ারত করা: কবর যিয়ারত করা শরিয়ত সমর্থিত একটি নেক আমল। কিন্তু ঈদের দিনে কবর জিয়ারত করার কোনো বিশেষত্ব নেই। ঈদের দিন কবর যিয়ারত করাতে বিশেষ সাওয়াব আছে বলে বিশ্বাস করা বা ঈদের দিনে কবর যিয়ারতকে অভ্যাসে পরিণত করা বা একটা প্রথা বানিয়ে নেয়া শরিয়তসম্মত নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:—

«لا تجعلوا قبري عيداً »... [رواه أبو داود و صححه الألباني]

“তোমরা আমার কবরে ঈদ উদযাপন করবে না বা ঈদের স্থান বানাবে না...”।[1]

৫. গান-বাদ্য: ঈদের দিনে এ গুনাহের কাজটাও বেশি হতে দেখা যায়। গান ও বাদ্যযন্ত্র যে শরিয়তে নিষিদ্ধ এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। আবার যদি হয় অশ্লীল গান তাহলে তো তা হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোনো ভিন্নমত নেই। হাদিসে এসেছে—

قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ليكون أقواما من أمتي يستحلون الحر والحرير والخمر والمعازف ». رواه البخاري تعليقا بصورة الجزم

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: আমার উম্মতের মাঝে এমন একটা দল পাওয়া যাবে যারা ব্যভিচার, রেশমি পোশাক, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল [বৈধ] মনে করবে।[2]

৬. পুরুষ কর্তৃক মহিলার বেশ-ধারণ করা ও মহিলা কর্তৃক পুরুষের বেশ ধারণ:

পোশাক-পরিচ্ছদ, চাল-চলন ও সাজ-সজ্জার ক্ষেত্রে পুরুষের মহিলার বেশ ধারণ ও মহিলা পুরুষের বেশ ধারণ করা হারাম। ঈদের দিনে এ কাজটি অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। হাদিসে এসেছে—

عن ابن عباس رضى الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم: « أنه لعن المتشبهات من النساء بالرجال والمتشبهين من الرجال بالنساء » .رواه أبو داود وصححه الألباني في صحيح أبي داود

ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত যে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ সকল মহিলাকে অভিসম্পাত করেছেন যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে এবং ঐ সকল পুরুষকে অভিসম্পাত করেছেন যারা মহিলার বেশ ধারণ করে।[3]

৭. অপচয় ও সীমালঙ্ঘন করা: এমন খরচ করা, যার পিছনে কোনো উদ্দেশ্য নেই, যার কোনো ফায়দা নেই, আর না আছে যার কোনো উপকার। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿ وَلَا تُسۡرِفُوٓاْۚ إِنَّهُۥ لَا يُحِبُّ ٱلۡمُسۡرِفِينَ ١٤١ ﴾ [الانعام: ١٤١]

“আর তোমরা অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদের ভালবাসেন না।”[4]

[1] আবু দাউদ: ২০৪২

[2] বুখারি: ৫৫৯০

[3] আবু দাউদ: ৪০৯৭

[4] সূরা আনআম, আয়াত: ১৪১