প্রশ্ন-৭৮ : সম্মানিত শায়খ, আপনারা এদেশের সালাফী আলিম (ওয়া লিল্লাহিল হামদ), শাসকদেরকে উপদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে আপনাদের মানহাজ শরী‘আত সম্মত, ঠিক যেমনভাবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণনা করেছেন। -আমরা আল্লাহ তা‘আলার উপর কাউকে পরিশুদ্ধ ঘোষণা করব না-। তবে কিছু লোককে পাওয়া যায়, যারা শরী‘আত পরিপন্থী কর্মকান্ড ঘটা সত্ত্বেও প্রকাশ্যে তার বিরোধিতা না করার কারণে আপনাদের দোষারোপ করে। কেউ কেউ বলে যে, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আপনাদের উপর চাপ রয়েছে। তাদের জন্য আপনি কিছু উপদেশ প্রদান করবেন কি?

উত্তর : নিঃসন্দেহে শাসকবর্গও অন্য সাধারণ ব্যক্তিদের মত মানুষ। তারা নিষ্পাপ নন। তাদেরকে উপদেশ দেয়া ওয়াজিব।[1] কিন্তু মঞ্চে ময়দানে তাদের ভুল-ত্রুটি আলোচনা করা,[2] বরং এগুলো হারাম গীবতের অন্তর্ভুক্ত। আর যদি তা শাসকদের ক্ষেত্রে হয় তাহলে তা আরো বেশি খারাপ বলে গণ্য হবে। কেননা এর কারণে ফিতনার উদ্ভব ঘটে, মুসলিমদের ঐক্য বিছিন্ন হয় এবং দা’ওয়াহর কাজ বাধাগ্রস্থ হয়।[3]

সুতরাং প্রচারণা ও শোরগোল বাদ দিয়ে গোপন ও নিরাপদ পন্থায় তাদের নিকট নছীহত পৌছানো ওয়াজিব। ‘‘এদেশের আলিমগণের বাস্তব অবস্থা হলো তারা নছীহত প্রদান করেন না।’’ অথবা ‘‘তারা তাদের কাজে অপারগ’’ ইত্যাদি।[4]

এটা তাদের এক অভিনব পন্থা। তারা এর দ্বারা উলামা, যুব সমাজ ও সাধারণ জনগনের মাঝে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করতে চায়। যাতে বিশৃঙখলাকারীদের জন্য অনিষ্ঠের ক্ষেত্র তৈরি করা সহজ হয়। কেননা আলিমদের ব্যাপারে ভুল ধারণা সৃষ্টি হলে জনসাধারনের নিকট থেকে আলিমদের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে যাবে এবং আহলুস সুন্নাহ বিরোধীদের বিষ ছাড়ানোর জন্য মোÿম সুযোগ তৈরি হবে।

আমি বিশ্বাস করি তাদের এই মতবাদ ধোঁকা প্রবঞ্চনাপূর্ণ অনুপ্রবেশকারী মতবাদ। তাদের বিষয় বস্তুও অপরিচিত। সুতরাং মুসলিমদের জন্য এই মতবাদ ও মতাদর্শীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকা ওয়াজিব।


[1]. ইবনু আবি আছিম (রহ.),  তার আস-সুন্নাহ নামক গ্রন্থের ২য় খণ্ড-র ৫০২ নং পৃষ্ঠায় বলেন, প্রজাদের জন্য শাসকদের প্রতি উপদেশ প্রদান করা যে ওয়াজিব এবিষয়ে অনেক হাদীছ রয়েছে। অন্মধ্য একটি হাদীছ হলো, যায়দ ইবনে ছাবিত (রা.) বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুসলিম ব্যক্তির অন্তর তিনটি অভ্যাসের ব্যাপারে কোন ত্রুটি করে না।
ক) ইখলাছ বা একনিষ্টতার সাথে আল্লাহর জন্য ইবাদত করা।
খ) শাসকদের কল্যান কামনা করা
গ) মুসলিম জামাতকে আঁকড়ে ধরা। কেননা ইসলামের দাওয়াত এসকল বিষয়কে একত্রিত করে। শায়খ আলবানী (রহ.), বলেন এ হাদীছের সানাদ সহীহ ।

[2]. দীন সম্পর্কে অজ্ঞ অথবা ফিতনাবাজ দাঈরা যা করে থাকে।

সম্মানিত শায়খ ইমাম আব্দুল আযীয ইবনে বায (রহ.) বলেন, মঞ্চে ময়দানে নেতৃবৃন্দকে গালি গালাজ করা কোন সংশোধনের পদ্ধতি নয়। বরং সংশোধনের পদ্ধতি হলো তাদের জন্য হিদায়াত ও তাওফিকের দু’আ করা এবং নিয়্যাত পরিশুদ্ধ করা এতদ্ব্যতিত কল্যাণ সাধিত হয় না। তাদেরকে অভিশস্পাত করা ইসলাম স্বীকৃত নয়। (আব্দুল মালিক রমদ্বানী আল-জাযাইরি সংকলিত ফাতাওয়াল ‘উলামাউল আকাবির পৃ. ৬৫)

[3]. এর দ্বারা সৎ কাজেও শাসকদের কথা শ্রবণ ও আনুগত্য না করা রক্তপাত ঘটানোর প্রতি উৎসাহ দেয়। যেমনটি ঘটেছিল উছমান (রা.) এর যামানায়। খারিজীরা যখন প্রকাশ্যভাবে ‘উছমান (রা.) কে গালি গালাজ করতে শুরু করেছিল তখনই তার হত্যার মত বর্বরোচিত ঘটনা ঘটে। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে তাদের যথোপযুক্ত ‘আযাব প্রদান করুন।

[4]. মাহমুদ হাদ্দাদ আল মিসরীয় প্রতি সম্বন্ধকৃত ফিরক্বায়ে হাদ্দাদ থেকে আলিমগণের প্রতি আরো নানাবিধ অপবাদ শুনে থাকি।

এই ফিরকা সর্বপ্রথম প্রকাশ্যভাবে হাফিয ইবনু হাজার আল ‘আসকলানীর ব্যাপারে অপবাদ দেয়া শুরু করেছে। এমনিভাবে ইমাম নাববী (রহ.) এর ব্যাপারেও তারা প্রকাশ্যভাবে অপবাদ দেয়। এর উপর পরীÿা নেয়। তাদের বিরুদ্ধাচরী মাত্রই বিদাতী বলে ফাতওয়া দেয়। এমনকি তারা ইমাম ইবনে বায, আল ফাওযান, আল-লাহীদান, আলবানী (রহ.) প্রমুখকেও অপবাদ দেয়। তাদের একজন তায়িফ নগরীতে গ্রীষ্মকালে ইবনে বায (রহ.) এর নিকট ইবনু ‘আছিম (রহ.) এর আস-সুন্নাহ নামক গ্রন্থ পাঠ করত। এর পর হঠাৎ সে ক্লাসে উপস্থিত হওয়া ছেড়ে দিল। তাকে এর কারণ জিজ্ঞসা করা হলে সে বলল, ‘আমরা তো ইবনে বাযের ভুল ধরার জন্যই তার ক্লাসে উপস্থিত হতাম’!!

আমি বলব সুউচ্চ ঝান্ডা, স্থির পর্বত, সুন্নাহর সাহায্যকারী এবং বিদাতীদের মূলোৎপাটনকারীদের বিরুদ্ধে তারা কীইবা দলিল কায়িম করবে? আল্লাহ তা‘আলা কি বিদ’আত ও বিদাতীদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেন না।

যারা লোকজনকে ‘আল-আক্বীদাতুত ত্বহাবিয়্যাহ’ পড়ার জন্য উপদেশ দেয় তাদের সম্পর্কে মাহমুদ আল হাদ্দাদ বলেন, ‘আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহর বর্তমান অনেক সদস্য আক্বীদাতুত ত্বহাবী ও এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ পড়ার পরামর্শ দেয়।

আমি (টীকা লেখক) বলছি, যারা এই কিতাব পড়ার পরামর্শ দেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন,  ইবনে বায। এমনকি তিনি মাসজিদে তার ছাত্রদেরকে এই কিতাব পড়ান। তারা শায়খ আলবানীর তাহকীক করারও বিরোধিতা করে। দেখুন তার কিতাব ‘আক্বীদাতু ইবনি আবি হাতিম ওয়া আবি যুরআহ’

আল্লাহ বিদাতীদের লাঞ্ছিত করুন, তারা তাদের পক্ষে যা পায় তা গ্রহণ করে এবং বিপক্ষে যা পায় তা বর্জন করে। হাদ্দাদের আচরণ পরষ্পর বিরোধী। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে লাঞ্ছিত করেছেন; সে ‘ইহইয়াউ উলুমিদ দীন’ গ্রন্থের হাদীছ তাখরীজ করেছে, আর এ কিতাবের মারাত্মক ত্রুটি-বিচ্যুতি সর্বজন বিদিত কিন্তু এতদসত্ত্বেও সে কোথাও সতর্ক করেনি, কোন টীকা-টিপ্পনি যোগ করেনি, অস্পষ্ট স্থানসমূহ স্পষ্ট করেনি এমনকি কোন প্রকারই সংস্কারই করেনি।

তার অনুসারীদের অনেকে আলিম-উলামার নিন্দায় লিপ্ত হয়। তারা শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমীয়া (রহ.) কেও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে। তারা বলেছে যে, তিনি নাকি মুরজিয়াদের ব্যাপারে শৈথিল্য প্রদর্শন করেছেন! তাদের ভাষায়, ‘ইবনু তাইমীয়া (রহ.) ‘ কিতাবুল ঈমানে’ বলেছেন, ‘ইরজা‘ হলো শাব্দিক বিদআত। হাদ্দাদ এর ব্যাখ্যায় বলেছে, এর অর্থ হলো তা প্রকৃত বিদআত নয়। (বিস্তারিত দেখুন ‘আক্বীদাতু আবি হাতিম ওয়া আবি যুরআহ আর-রাযাইন, পৃষ্ঠা নং ৮৯-৯০)

তার পদস্খলন এতেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং তার দ্বারা ধোঁকাগ্রস্থদের সামনে তার প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরার জন্য এখানে মাত্র কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা হলো। হাদ্দাদ তাদের নিকট আসার পূর্বে যদি তারা তার প্রকৃতরূপ জানত তাহলে ইবনে হাজার, ইমাম নববী, ইবনে হাযম, ইমাম শাওকানী ও ইমাম আলবানী প্রমুখকে বিদাতী বলার দুঃসাহিকতা প্রদর্শন করত না।

মাহমুদ আল-হাদ্দাদ বিদাতীদের বই-পুস্তক পাঠ করা এমনকি ওগুলোর প্রতি দৃষ্টিপাত করাও বৈধ মনে করে না। এটা ভালো দিক তবে, হক থেকে মুখ বিমুখ হয়ে বিদআতের প্রতি আহবানকারী বিদাতী ও ইজতিহাদ ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতে গিয়ে সুন্নাহর অনুসারী ও খাদেমের অনিচ্ছাকৃত ভাবে বিদআতে যুক্ত হওয়া এদুটোর মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান।  মাহমুদ আল হাদ্দাদ বলেন, মানুষ যতক্ষণ পর্যন্ত বিদআত, বিদআতের স্থল, বিদাতীর কিতাবাদি এককথায় বিদআত সংশিস্নষ্ট বিষয়াদি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সে আহলুস সুন্নাহর অনুসারী হতে পারবে না। (‘আক্বীদাতু আবি হাতিম ওয়া আবি যুরআহ’ জাম‘উল হাদ্দাদ পৃ. নং ১০৫)

এই হলো, তার অবস্থা যে ‘সে ইবনে বায কর্তৃক ‘আক্বীদাতুত ত্বহাবী’ এর দারস প্রদান করাকে অপছন্দ ও অপ্রয়োজনীয় মনে করত, শায়খ আলবানীর তাহকীক করা অপছন্দ করেছে; অথচ ইবনুল জাওযী (রহ.)-এর সইদুল খাতির নামক গ্রন্থের সারসংÿÿপ করেছে।

হাদ্দাদের মানহাজ পর্যালোচনা:

এখানে দু’টি বিষয় গভীরভাবে লক্ষণীয়

০১ তার জন্য ইবনুল জাওযী (রহ.) এর কিতাব পড়া কীভাবে বৈধ হতে পারে; অথচ সে নিজেই ‘সইদুল খাত্বির’ এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘‘আল-মুকতানী আল-আত্বির’’ এর ভূমিকায় ইবনুল জাওযী সম্পর্কে  বলেছে, ‘সে একজন জাহমী’। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لِمَ تَقُولُونَ مَا لا تَفْعَلُونَ * كَبُرَ مَقْتاً عِنْدَ اللَّهِ أَنْ تَقُولُوا مَا لا تَفْعَلُونَ

 হে ঈমানদারগণ! তোমরা তা কেন বল, যা তোমরা কর না?! তোমরা যা কর না, তা বলা আল্লাহর নিকট বড়ই ক্রোধের বিষয়।  (সূরা আস সফ আয়াত নং ২-৩)

أَتَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنْسَوْنَ أَنْفُسَكُمْ وَأَنْتُمْ تَتْلُونَ الْكِتَابَ أَفَلا تَعْقِلُونَ

 তোমরা কি মানুষকে ভাল কাজের আদেশ দিচ্ছ আর নিজদেরকে ভুলে যাচ্ছ? অথচ তোমরা কিতাব তিলাওয়াত কর। তোমরা কি বুঝ না? আল-বাক্বারা ৪৪

০২ ‘সইদুল খত্বির’ একটি নিকৃষ্টতর গ্রন্থ, যে গ্রন্থ সম্পর্কে সকল মানুষকে সতর্ক করা অত্যাবশ্যক-তাহলে তুমি নিজের জন্য কীভাবে এই কিতাব পাঠ করা ও এর পিছনে সময় ব্যয় করা বৈধ মনে করো? তুমি এ মাধ্যমে লোকজনকে ধোঁকা দিচ্ছ! তুমি কি এভাবে সকল বিদাতী ও তাদের বই-পুস্তক থেকে সতর্ক করো? যখন কোন ব্যক্তি এই কিতাবের উপর তোমার নাম দেখবে সে মনে করবে, ‘এটাও আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহর কিতাব’ অথচ এই কিতাবের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ‘আল্লাহ বলেছেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ছাহাবীগণ বলেছেন এরকম কোন কথা নেই।

নিশ্চই হাদ্দাদ ও তার সঙ্গী-সাথীরা ইমাম ইবনু হাজার, ইমাম নভবী (রহ.) ও তাদের মত অন্য সকল আলিমের প্রতি রহম করে না।

‘আক্বীদাতু আবি হাতিম’ নামক গ্রন্থেও ১০৬ নং পৃষ্ঠায় সে ‘‘ইমাম ও ইয়ারহামুহুল্লাহ’’ আল্লাহ তাদের প্রতি রহম করুন বলার বিরোধিতা করেছে। তার ভাষায় ‘ বিদাতীদের নেতাদের ও সুন্নী উপাধি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি তাদেরকে ইমাম অভিধা প্রদান করা হচ্ছে ও নামের শেষে ‘‘ইয়ারহামুুহুল্লাহ’’ আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন যোগ করা হচ্ছে।

আলিম-উলামা সম্পর্কে এ ব্যক্তি ও এর সমমনাদের ধৃষ্টতা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। তারা তাদেরকে গালি-গালাজ করে। আলী ইবনুল হাসান ইবনু আসাকির (রহ.) সম্পর্কে সে মন্তব্য করেছে, ‘ সে পাক্কা জাহমী’। দেখুন তার তাহকীক ‘আল-জামি’ আলা হিফযিল ইলম’ গ্রন্থের পৃষ্ঠা ২১২ তে।

আমি বলব, হাদ্দাদ কর্তৃক আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহকে কটাক্ষ করা, শায়খ ইবনে বায, উছায়মিন, ফাওযান প্রমুখের ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করা এবং তারা যে ‘আল- আকীদা আত-ত্বহাবিয়্যাহ’ ও এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ পড়ার পরামর্শ দেন এর বিরোধিতা করা তার চরমপন্থী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। সে দাবি করে, এভাবে নাকি সে ইসলামী আকীদাকে যাবতীয় সন্দেহ-সংশয় থেকে হেফাযত করে। সুবহানাল্লাহ!

আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাত তার সমালোচনা থেকে নিষ্কৃতি পায়নি অথচ বিপরীতে বিদাতী, শিরকে লিপ্ত ও কুসংষ্কারে লিপ্তরা মুক্তি পেয়েছে! তাহলে এটা কেমন ইসলামী আকীদার প্রতি আগ্রহ?

তার সমালোচনা থেকে ‘ইখওয়ানুল মুসলিমীন’ নিরাপদ, যাদের উদ্ভট আচরণে পুরো মিসর অতীষ্ট। তাদের সমালোচনায় সে কিছু বলেছে বলে কোন প্রমাণ নাই। তাদের ব্যাপারে কোন কিতাব প্রকাশ করা দূরের কথা কোন প্রবন্ধ এমনকি দৈনিক পত্রিকায় দু‘-এক ছত্রও লিখেনি। দীর্ঘদিন মিসরে অবস্থানকালীন কিংবা তাদের কষ্ট-ক্লেশ থেকে নিরাপত্তার জন্য বিলাদুল হারামাইনের শান্তি-সুখণ্ডনিরাপত্তার দিনগুলোতে কখনোই সে তাদের সম্পর্কে কিছু লিখেনি।

কবরপূজারীরা তার সমালোচনা থেকে নিরাপদ। তার দেশে মাজারব্যবসা জমজমাট; সেখানে মানুষ প্রকাশ্যে কবর তাওয়াফ করে, ছুঁয়ে ধন্য বোধ করে, ওলী-আওলিয়াদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে-কেউ তাদের প্রতিরোধ করে না। সুফীরা, মিলাদপন্থীরা তার সমালোচনা থেকে নিরাপদ। তাকফীরী খারিজীরা তার সমালোচনা থেকে নিরাপদ।

তাবলীগ-জামাত তার সমালোচনা থেকে নিরাপদ। এভাবে সে আরো অনেক বাতিলগোষ্ঠীর থেকে নীরব। তার পক্ষে কী অসম্ভব ছিল, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অনুসারী ও এর দাঈগণের সমালোচনা থেকে নীরব থাকা, যারা শিরক, বিদআত ও যাবতীয় পাপাচার ও বিদাতীদের থেকে উম্মাহকে সতর্ক করে?