দাড়ির ব্যাপারে বিখ্যাত ‘আলেমদের অভিমত

এদের মধ্যে- শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবন তাইমিয়্যা রহ., ‘আল্লামা ইবন হাযম আয-যাহিরী রহ., ‘আল্লামা ইবন আবদুল বার্‌র, ‘আল্লামা আহমদ ইবন আবদুর রহমান আল বান্না রহ., মুহাদ্দিস শাইখ নাছের উদ্দিন আল-আলবানী রহ., সৌদি আরবের প্রধান মুফতি আব্দুল আযীয ইবন বায রহ., শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল উসায়মীন, ডা. জাকির নায়েক উল্লেখযোগ্য।

১- হাফেয ‘আল্লামা আবু মুহাম্মদ আলী ইবন হাযম (মৃত: ৪৫৬ হি.) বলেন,

اتفق العلماء على أن قص الشارب وإعفاء اللحية فرض.

“সমস্ত আলেম একমত যে, মোচ কাটা এবং দাড়ি রাখা ফরয (ওয়াজিব)।”

২- ইমাম ইবন আবদিল বার্‌র রহ. (মৃত: ৪৬৩ হি.) তার তামহীদ কিতাবে বলেন,

يحرم حلق اللحية ولا يفعله إلا المخنثون من الرجال يعني بذلك المتشبهين بالنساء

“দাড়ি শেভ করা হারাম। আর এ কাজটি মুখান্নাচ বা নারীর বেশ ধারণকারীই করে, কোনো পুরুষের কাজ নয় এটি।”

৩- ইমাম কুরতুবী (রহ.) (মৃত: ৬৭১ হি.) বলেন, দাড়ি শেভ করা বা উঠিয়ে ফেলা বা কাট-চাট করে ষ্টাইল করে রাখা নাজায়েয। দাড়ি রাখা, বাড়িয়ে ও ঘন করে রাখা ফরয। দাড়ি শেভকারী তার এ গোনাহকে সবার সামনে প্রকাশ করে, যা অতি কঠিন হারাম কাজ। সহীহ বুখারীর হাদীসে রয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«كُلُّ أُمَّتِي مُعَافًى إِلَّا المُجَاهِرِينَ،».

“আমার উম্মতের সবাইকে আল্লাহর রহমতে মাফ করা হবে, তবে তারা ব্যতীত যারা গোনাহ ও নাফরমানীকে সকলের কাছে প্রকাশ করে বেড়ায়......”।[1]

৪- শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যা রহ. (মৃত: ৭২৮ হি.) বলেন, দাড়ি শেভ করা হারাম।

৫- আবুল হাসান ইবনুল কাত্তান আল মালেকী রহ. বলেন, আলেমরা একমত যে, দাড়ি শেভ করা অঙ্গবিকৃতি করার মতো হারাম কাজ।”

৬- সৌদী আরবের সামাহাতুশ শাইখ আল্লামা শায়খ ইবন বায (রহ.) (মৃত: ১৪২০ হি.) বলেন, দাড়িকে সংরক্ষণ করা, পরিপূর্ণ, ঘণ রাখা ও ছেড়ে দেওয়া ফরয। এই ফরযের প্রতি অবহেলা করা জায়েয নয়। আর দাড়ি মুণ্ডানো (শেভ করা) ও ছোট করা হারাম।

৭- শাইখ ইবন উসাইমীন রহ. (মৃত: ১৪২১ হি.) বলেন, দাড়ি রাখা ওয়াজিব, তা শেভ করা হারাম (কবীরা গুনাহ)।

৮- আব্দুর রহমান আল বান্না তার প্রসিদ্ধ “আল–ফাতহুর রব্বানী” গ্রন্থে লিখেন ‘দাড়ি মুণ্ডানো (শেভ করা) হারাম’।

৯- শাইখ আলবানী রহ. তার “আদাবুয যিফাফ” গ্রন্থে দাড়ি মুণ্ডানো (শেভ করা) হারাম হওয়ার ওপর ৪টি দলীল উল্লেখ করে বলেন এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে, দাড়ি বৃদ্ধি করা ওয়াজিব এবং দাড়ি মুণ্ডানো (শেভ করা) করা হারাম।

১০- ‘আলেমে দীন হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী রহ. তাঁর বিখ্যাত “ইসলাহুর রুসুম” গ্রন্থে লিখেছেন যে সহীহ আল বুখারী ও সহীহ মুসলিম শরীফের হাদীসে উল্লেখ রয়েছে-“আ‘ফুল লূহা ওয়া আহ্ফুস্ শাওয়ারেব” যার অর্থ: “তোমরা দাড়ি বড় কর ও মোচ ছোট কর।” রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুকুম করেছেন ছিগায়ে আমর দ্বারা অর্থাৎ হুকুমবাচক ক্রিয়াপদ দ্বারা। আর ‘আমর’ (আদেশ) হাকীকাতান (মূলত) ওয়াজিবের জন্য ব্যবহার হয়।

১১- শেখ আলী মাহফুয আল আযহারী বলেন, ৪ মাযহাবের আলেমগণ একমত যে, দাড়িকে ঘন রাখা ওয়াজিব, শেভ করা হারাম।”প্রসিদ্ধ চার মাযহাবের ফিকহবিদগণও দাড়ি ছেড়ে দেওয়া ওয়াজিব ও কেটে ফেলা বা শেভ করাকে হারাম বলে মত প্রকাশ করেছেন।

>
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০৬৯।