মুসল্লীদের কাতারগুলোর পেছনে একাকী দাঁড়িয়ে একই জামা‘আতে সালাত আদায়ের বিধান:

মূলতঃ উক্ত মাসআলার তিনটি দিক হতে পারে। অন্য কথায় বলা যেতে পারে, কেউ জামা‘আতে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলো, সামনের কাতারগুলো পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। তখন সে নিম্নোক্ত তিনটি কাজের যে কোনো একটি করতে পারে:

ক. সে মুসল্লীদের কাতারগুলোর পেছনে একাকী দাঁড়িয়ে উক্ত ইমামের পেছনেই সালাত পড়বে।

খ. সামনের কাতার থেকে কাউকে টেনে নিয়ে ভিন্ন আরেকটি কাতার বানিয়ে সালাত পড়বে।

গ. ইমাম সাহেবের ডান পার্শ্বে গিয়ে তাঁর সাথেই কাতার বানিয়ে সালাত পড়বে।

এ দিকগুলো হচ্ছে যদি সে জামা‘আতে সালাত আদায় করতে চায়। আর যদি সে জামা‘আতে সালাত না পড়ে একাকী পড়তে চায় তা হলে তা হবে চতুর্থ আরেকটি দিক।

উক্ত চারটি দিকের প্রথমটিই হচ্ছে সঠিক মত। কারণ, লোকটির ওপর ছিলো মূলতঃ দু’টি ওয়াজিব। তার একটি হচ্ছে জামা‘আতে সালাত পড়া। অপরটি হচ্ছে জামা‘আতে কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়ানো। যখন তার জন্য দ্বিতীয়টি করা সম্ভবপর নয় তখন সে শুধু প্রথমটিই করবে। যেমন: কোনো মহিলা একাকী হলে তাকেও কাতারগুলোর পেছনে একাকী দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে হয়।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

“তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করো”। [সূরা আত-তাগাবুন, আয়াত: ১৬]

বাকি তিনটি দিকের কোনোটি করা তার জন্য কোনোভাবেই সঠিক নয়। কারণ, দ্বিতীয়টি তথা সামনের কাতার থেকে কাউকে টেনে নিয়ে ভিন্ন আরেকটি কাতার বানিয়ে সালাত আদায় করতে গেলে নিম্নোক্ত তিনটি সমস্যা দেখা দিবে:

১. আগের কাতার থেকে একটি লোককে পেছনে টেনে নেয়ার কারণে তাতে একটি খালিস্থান সৃষ্টি হবে। যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ কাতার পুরা করা ও তাতে কোনো খালি জায়গা না রাখা বিরোধী। যা কখনো চলতে দেওয়া যায় না।

২. উক্ত লোকটিকে একটি ভালো জায়গা থেকে তার চাইতে মানে নিম্ন এমন একটি জায়গায় নেওয়া হলো। যা করা সত্যিই অনুচিত।

৩. উক্ত লোকটিকে পেছনে টেনে নেওয়ার দরুন তার সালাতের মনোযোগে কিছুটা বাধা সৃষ্টি করা হলো। যা করাও সত্যিই অনুচিত।

তৃতীয় দিক তথা ইমাম সাহেবের ডান পার্শ্বে গিয়ে তাঁর সাথেই কাতার বানিয়ে সালাত পড়াও সঠিক নয়। কারণ, ইমাম সাহেবকে তো স্থানের দিক দিয়েও তাঁর মুসল্লীদের তুলনায় একটু বিশেষ অবস্থানে থাকা উচিৎ। যেমনিভাবে তিনি সালাতের যে কোনো মৌখিক যিকির ও কাজে অন্যান্যদের তুলনায় কিছুটা অগ্রবর্তী রয়েছেন। এ দিকে কোনো মুসল্লী তাঁর সাথে পাশাপাশি দাঁড়ালে তাঁর আর স্থানগত কোনো বিশেষত্ব থাকে না।

চতুর্থ দিক তথা এমতাবস্থায় জামা‘আতে সালাত না পড়ে একাকী পড়া তাও কোনোভাবেই সঠিক নয়। কারণ, লোকটির ওপর মূলতঃ রয়েছে দু’টি ওয়াজিব। যার একটি হচ্ছে জামা‘আতে সালাত পড়া। অপরটি হচ্ছে জামা‘আতে কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়ানো। যখন তার জন্য দ্বিতীয়টি করা সম্ভবপর নয় তখন সে শুধু প্রথমটিই করবে। দ্বিতীয়টি করতে পারছে না বলে প্রথমটিও সে বাদ দিবে তা কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়।