নগ্ন, উলঙ্গ, অর্ধ উলঙ্গ পোশাক পরিচ্ছদ:

মুসলিম যুবকরা এমন সব পোশাক পরিচ্ছদ অবলম্বন করছে, তাদের দেখলে মনে হয় না তারা কোনো মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করছে। তাদের পরিধেয় পোশাকগুলো কোনো প্রকার রুচিশীলতার পরিচয় বহন করে না। তাদের মন-মগজ ও মস্তিষ্ক যে কত নিচে নামছে তা তাদের পোশাক দেখলেই বুঝা যায়। নাটক সিনেমার নায়ক, নায়িকারা কি ধরনের পোশাক পরল সে নিজেও সে ধরনের পোশাক পরিধানে ব্যস্ত। অথচ এ ধরনের পোশাক দ্বারা সতর ডাকা হলো কি হলো না তার প্রতি বিন্দু পরিমাণও ভ্রুক্ষেপ করতে রাজি নয়। এই ছবিগুলোর নামে যে পোশাকটি বের হবে তা কোনো এক বন্ধু যদি আগে কিনে থাকে তাহলে সে অন্য বন্ধুদের প্রশংসা কুড়িয়ে নিতে সক্ষম হয়। সম্প্রতি আমরা দেখতে পাই যে, তেরে-নাম, রা-ওয়ান, জিলিক, টাপুর-টুপুর, ওয়াকা-ওয়াকা, বিন্ধু, দেবদাস এ ধরনের বিভিন্ন ছবি, অভিনেতা- অভিনেত্রীর নামে যে পোশাকগুলো বের হয়েছে তা আমাদের যুব সমাজের পছন্দ কুড়িয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। ফলে তারা তাদের অনুকরণে বিভিন্ন নামের পোশাক কিনছে এবং তাকে তারা তাদের ফ্যাশন হিসেবে গ্রহণ করছে। আমাদের যুবক যুবতীরা এমন সব পোশাক পরিধান করছে, যা দেখে মনে হয় না তারা কোনো সভ্য পরিবারে বসবাস করছে। ইসলামী শরীয়তে পোশাকের যে মানদণ্ড নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে তা যদি সমাজে বাস্তবায়িত হত এবং আমাদের যুব সমাজ তার অনুকরণ করত তাহলে সামাজিক অবক্ষয় অনেকটা কমে যেত। কিন্তু যুব সমাজ যৌন উত্তেজক ও অর্ধ উলঙ্গ পোশাক পরিধান করার ফলে আজ সমাজে আমরা প্রতি নিয়তই দুর্ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছি। সামাজিক ক্রাইম-এসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ, ইভটিজিং, যৌন হয়রানী ইত্যাদি দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ যদি আমাদের যুবক ভাই ও বোনেরা ইসলামী দিক নির্দেশনা অনুযায়ী নিজেদের জীবনকে গড়ে তুলত এবং পোশাক পরিচ্ছদে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলত, তাহলে তারা তাদের সোনালী ভবিষ্যৎ রচনা করতে পারত। কিন্তু না, তারা তাদের নিজেদের ঐতিহ্যকে বাদ দিয়ে বিজাতিদের পোশাক পরিচ্ছদ গ্রহণেই ব্যাকুল। আর আমাদের প্রাণ প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‌আলাইহি ওয়াসাল্লাম পোশাক পরিচ্ছদে বিজাতিদের অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। আমরা যাতে আমাদের যাবতীয় কর্মে বিজাতিদের অনুকরণ না করি সে ব্যাপারে তিনি অধিক সতর্ক করেছেন।

একদা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমরকে দু’টি জাফরান রঙের কাপড় পরে থাকতে দেখে বললেন, “এ ধরনের কাপড় হলো কাফেরদের। অতএব তুমি তা পরো না[1]।”

এ থেকে বুঝা যায় যে, যে ধরনের লেবাস-পোশাক বিজাতির বিশেষ প্রতীক তা কোনো মুসলিম নর-নারী ব্যবহার করতে পারে না।

প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা মোচ ছেঁটে ফেল এবং দাড়ি ছেড়ে দাও। আর একাজ করে তোমরা মুশরিকদের অন্যথাচরণ কর[2]।”

“মোচ ছেঁটে ও দাড়ি রেখে অগ্নিপূজকদের বৈপরীত্য কর[3]।”

“এবং ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদের সাদৃশ্য অবলম্বন করো না[4]।”

চুল-দাড়ি পেকে সাদা হয়ে গেলে সাদাই রেখে দেওয়া বিজাতীয় আচরণ। তাই ইসলামের আদেশ হল, তা কালো ছাড়া অন্য কোনো রঙ দ্বারা রঙিয়ে ফেল এবং বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করো না[5]। মাথায় পরচুলা ব্যবহার ইয়াহুদী মেয়েদের আচরণ। অতএব তা কোনো মুসলিম নারী ব্যবহার করতে পারে না।[6]

>
[1] মুসলিম, আহমাদ ২/১৬২

[2] বুখারী, হাদিস: ৫৮৯৩, মুসলিম, হাদিস: ২৫৯

[3] মুসলিম, হাদিস: ২৬০

[4] আহমাদ, সহীহুল জামে’, হাদিস: ১০৬৭

[5] বুখারী, হাদিস: ৩৪৬২, মুসলিম, হাদিস: ২১০৩, আহমাদ, ত্বাবারানী, সহীহুল জামে’, হাদিস: ১০৬৭, ৪৮৮৭

[6] মুসলিম, হাদিস: ২৭৪২