৫৯২২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা

৫৯২২-[৫৫] ইয়া’লা ইবনু মুররাহ্ আস্ সাকাফী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) হতে তিনটি (অলৌকিক) জিনিস দেখেছি।
১. একবার আমরা তার সাথে ভ্রমণে বের হলাম। চলার পথে আমরা এমন একটি উটের কাছে দিয়ে গমন করছিলাম, যার দ্বারা পানি বহন করার কাজ করানো হয়। উটটি যখন নবী (সা.) -কে দেখল, তখন সে জিরজির আওয়াজ করে নিজের ঘাড়টি মাটিতে রাখল। নবী (সা.) সেখানে থেমে গেলেন এবং বললেন, এ উটটির মালিক কোথায়? সে তার কাছে আসলো। তিনি (সা.) তাকে বললেন, তোমার এ উটটি আমার কাছে বিক্রয় করে দাও। সে বলল, বরং হে আল্লাহর রাসূল! আমি তা আপনাকে দান করলাম! মূলত তা এমন এক পরিবারের লোকেদের উট, যাদের কাছে তা ছাড়া রুযীরোজগারের আর কিছুই নেই। অতঃপর তিনি (সা.) বললেন, অবস্থা যখন এরূপই যা তুমি বলেছ। তবে শুন! তা আমার কাছে এ অভিযোগ করেছে যে, তার দ্বারা অধিক কাজ নেয়া হয় এবং তাকে খাবার অল্প দেয়া হয়। অতএব তোমরা তার সাথে সদাচরণ করবে।
২. অতঃপর আমরা সামনের দিকে রওয়ানা হলাম। অবশেষে এক জায়গায় এসে আমরা অবস্থান করলাম এবং নবী (সা.) সেখানে ঘুমিয়ে পড়লেন। তখন একটি গাছ জমিন ফেড়ে এসে তার উপর ঝুঁকে পড়ল। অতঃপর গাছটি তার পূর্বের স্থানে চলে গেল। রাসূলুল্লাহ (সা.) ঘুম হতে জেগে উঠলে আমি তাঁকে এ ঘটনাটি বর্ণনা করলাম। তখন তিনি (সা.) বললেন, এ গাছটি আল্লাহর রাসূল (সা.)
-কে সালাম করার জন্য নিজের প্রভুর কাছে অনুমতি চেয়েছিল। অতএব তিনি তাকে অনুমতি দিয়েছিলেন।
৩. বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমরা সেখান থেকে সম্মুখের দিকে যাত্রা করলাম এবং একটি জলাশয়ের নিকট পৌছলাম। তখন একজন মহিলা নবী (সা.) -এর কাছে তার এমন একটি ছেলেকে নিয়ে আসলো, যার মাঝে জিনের আসর ছিল। তখন নবী (সা.) এই ছেলেটির নাকে ধরে বললেন, “তুমি বের হও, আমি আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ।” বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আমরা আরো সামনের দিকে সফর করলাম। ফেরার পথে যখন আমরা উক্ত জলাশয়ের কাছে আসলাম, তখন নবী (সা.) ঐ ছেলেটির মাকে তার ছেলেটির অবস্থা সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। সে বলল, ঐ সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন, আপনার চলে যাওয়ার পর হতে ছেলেটির মধ্যে আমরা অপ্রীতিকর আর কিছু দেখতে পাইনি। (শারহুস সুন্নাহ্)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب فِي المعجزا)

وَعَن يعلى بن مرَّةَ الثَّقفي قَالَ ثَلَاثَةُ أَشْيَاءَ رَأَيْتُهَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْنَا نَحْنُ نَسِيرُ مَعَه إِذ مَرَرْنَا بِبَعِير يُسْنَى عَلَيْهِ فَلَمَّا رَآهُ الْبَعِيرُ جَرْجَرَ فَوَضَعَ جِرَانَهُ فَوَقَفَ عَلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ أَيْنَ صَاحِبُ هَذَا الْبَعِيرِ فَجَاءَهُ فَقَالَ بِعْنِيهِ فَقَالَ بَلْ نَهَبُهُ لَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَإِنَّهُ لِأَهْلِ بَيْتٍ مَا لَهُمْ مَعِيشَةٌ غَيْرُهُ قَالَ أَمَا إِذْ ذَكَرْتَ هَذَا مِنْ أَمْرِهِ فَإِنَّهُ شَكَا كَثْرَةَ الْعَمَلِ وَقِلَّةَ العلفِ فَأحْسنُوا إِلَيْهِ قَالَ ثمَّ سرنا فنزلنا مَنْزِلًا فَنَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَجَاءَتْ شَجَرَةٌ تَشُقُّ الْأَرْضَ حَتَّى غَشِيَتْهُ ثُمَّ رَجَعَتْ إِلَى مَكَانِهَا فَلَمَّا اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذُكِرَتْ لَهُ فَقَالَ هِيَ شجرةٌ استأذَنَتْ ربّها عز وَجل أَنْ تُسَلِّمَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَذِنَ لَهَا قَالَ ثُمَّ سِرْنَا فَمَرَرْنَا بِمَاءٍ فَأَتَتْهُ امْرَأَةٌ بِابْنٍ لَهَا بِهِ جِنَّةٌ فَأَخَذَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بمنخره فَقَالَ اخْرُج إِنِّي مُحَمَّد رَسُول الله قَالَ ثمَّ سرنا فَلَمَّا رَجعْنَا من سفرنا مَرَرْنَا بِذَلِكَ الْمَاءِ فَسَأَلَهَا عَنِ الصَّبِيِّ فَقَالَتْ وَالَّذِي بَعثك بِالْحَقِّ مَا رأَينا مِنْهُ رَيباً بعْدك. رَوَاهُ فِي شرح السّنة

اسنادہ ضعیف ، رواہ البغوی فی شرح السنۃ (13 / 295 ۔ 296 ح 3718) [و احمد (4 / 173 ح 17708) * فیہ عبداللہ بن حفص : مجھول و عطاء بن السائب : اختلط ، رواہ عنہ معمر ولہ شواھد ضعیفۃ عند الحاکم (2 / 617 ۔ 618) و احمد (4 / 170) وغیرھما

وعن يعلى بن مرة الثقفي قال ثلاثة اشياء رايتها من رسول الله صلى الله عليه وسلم بينا نحن نسير معه اذ مررنا ببعير يسنى عليه فلما راه البعير جرجر فوضع جرانه فوقف عليه النبي صلى الله عليه وسلم فقال اين صاحب هذا البعير فجاءه فقال بعنيه فقال بل نهبه لك يا رسول الله وانه لاهل بيت ما لهم معيشة غيره قال اما اذ ذكرت هذا من امره فانه شكا كثرة العمل وقلة العلف فاحسنوا اليه قال ثم سرنا فنزلنا منزلا فنام النبي صلى الله عليه وسلم فجاءت شجرة تشق الارض حتى غشيته ثم رجعت الى مكانها فلما استيقظ رسول الله صلى الله عليه وسلم ذكرت له فقال هي شجرة استاذنت ربها عز وجل ان تسلم على رسول الله صلى الله عليه وسلم فاذن لها قال ثم سرنا فمررنا بماء فاتته امراة بابن لها به جنة فاخذ النبي صلى الله عليه وسلم بمنخره فقال اخرج اني محمد رسول الله قال ثم سرنا فلما رجعنا من سفرنا مررنا بذلك الماء فسالها عن الصبي فقالت والذي بعثك بالحق ما راينا منه ريبا بعدك. رواه في شرح السنة اسنادہ ضعیف ، رواہ البغوی فی شرح السنۃ (13 / 295 ۔ 296 ح 3718) [و احمد (4 / 173 ح 17708) * فیہ عبداللہ بن حفص : مجھول و عطاء بن الساىب : اختلط ، رواہ عنہ معمر ولہ شواھد ضعیفۃ عند الحاکم (2 / 617 ۔ 618) و احمد (4 / 170) وغیرھما

ব্যাখ্যা: (ثَلَاثَةُ أَشْيَاءَ) অর্থাৎ তিনটি মু'জিযাহ্।
(رَأَيْتُهَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) অর্থাৎ একই সফরে আমি রাসূল (সা.) থেকে তিনটি মু'জিযাহ্ লক্ষ্য করেছি।
(فَلَمَّا رَآهُ الْبَعِيرُ جَرْجَرَ) অর্থাৎ উটটি এমনভাবে আওয়াজ করল যে, তার গলা থেকে আওয়াজ বের হতে থাকল। যেমনটি উল্লেখ করেছেন কাযী ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ)।
গাছ তার জায়গা থেকে সরে নবী (সা.) -এর নিকটে এসে তাকে সালাম জানিয়ে তার নিজের জায়গায় ফেরত গেল। এটা নবী (সা.)-এর বিরাট একটি মু'জিযাহ্ ছিল। যা দ্বারা আল্লাহ তাকে সম্মানিত করেছিলেন।
তারপর নবী (সা.) - মহিলার পাগল ছেলেটির নাকের ছিদ্র ধরে বললেন, তিনি হয়তো ঐ পাগল ছেলেকে অথবা তার ওপর যে জিন্ ভর করেছিল তাকে বললেন, আমি মুহাম্মাদ, অতএব তুমি বের হয়ে আসো। এরপর থেকে ছেলেটি সুস্থ হয়ে উঠেছিল। এটাও নবী (সা.) -এর একটি বিরাট মু'জিযাহ্ ছিল। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)