৪৮৮০

পরিচ্ছেদঃ ১১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ওয়া‘দা বা প্রতিশ্রুতি

৪৮৮০-[৩] ’আবদুল্লাহ ইবনু আবুল হাসমা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নুবুওয়াত লাভের পূর্বে একদিন আমি তাঁর কাছ থেকে কিছু কেনাকাটা করি, যার কিছু মূল্য পরিশোধ করতে বাকি রয়ে গিয়েছিল। আমি তাঁর সাথে ওয়া’দা করেছিলাম যে, আমি অবশিষ্ট দাম নিয়ে তাঁর নির্ধারিত স্থানে এসে উপস্থিত হব। আমি এ প্রতিশ্রুতির কথা ভুলে গেলাম। তিনদিন পরে আমার স্মরণ হলো। এসে দেখলাম, তিনি সে নির্দিষ্ট স্থানেই আছেন। আমাকে দেখে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তুমি আমাকে খুব বিপদে ফেলেছিলে। আমি তিনদিন যাবৎ তোমার অপেক্ষা করছি। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن عبدِ الله بن أبي الحَسْماءِ قَالَ: بَايَعْتُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَبْلَ أَنْ يُبْعَثَ وَبَقِيَتْ لَهُ بَقِيَّةٌ فَوَعَدْتُهُ أَنْ آتِيَهُ بِهَا فِي مَكَانِهِ فَنَسِيتُ فَذَكَرْتُ بَعْدَ ثَلَاثٍ فَإِذَا هُوَ فِي مَكَانِهِ فَقَالَ: «لَقَدْ شَقَقْتَ عَلَيَّ أَنَا هَهُنَا مُنْذُ ثَلَاثٍ أنتظرك» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن عبد الله بن ابي الحسماء قال: بايعت النبي صلى الله عليه وسلم قبل ان يبعث وبقيت له بقية فوعدته ان اتيه بها في مكانه فنسيت فذكرت بعد ثلاث فاذا هو في مكانه فقال: «لقد شققت علي انا ههنا منذ ثلاث انتظرك» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যাঃ (بَايَعْتُ النَّبِىُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট থেকে কিছু কিনেছি নুবুওয়াত প্রাপ্তির পূর্বে এবং উক্ত ক্রয়কৃত বস্তুর কিছু মূল্য বাকী ছিল। আমি তাকে ওয়া‘দা দিয়েছিলাম যে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট স্থানে তার নিকট আসব এবং তা পরিশোধ করে দিব। কিন্তু আমি সেই ওয়া‘দার কথা ভুলে গিয়েছিলাম। তিনদিন পর আমার স্মরণ হলে আমি সঙ্গে সঙ্গে উক্ত স্থানে এসে দেখি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত স্থানে অবস্থান করছেন। এখানে থেকে বুঝা যায় ওয়া‘দা বাস্তবায়ন এবং তা পূর্ণ করা মুস্তাহাব।

(فَقَالَ:لَقَدْ شَقَقْتَ) অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি আমাকে কষ্টে ফেলে দিয়েছ। আমি এখানে তিনদিন থেকে অপেক্ষা করছি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষ থেকে উক্ত স্থানে উপস্থিত থাকা মূল্য প্রাপ্তির জন্য ছিল না, সেটা ছিল প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য।

‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ জেনে রাখা ভালো যে, ওয়া‘দা রক্ষা করার ব্যাপারে প্রত্যেক ধর্মেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পূর্ববর্তী সকল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা হিফাযাত করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ وَإِبْرَاهِيمَ الَّذِي وَفّٰى ‘‘আর ইব্রাহীমের (কিতাবের খবর) যে (ইব্রাহীম) ছিল পুরোপুরি দায়িত্ব পালনকারী’’- (সূরাহ্ আন্ নাজম ৫৩ : ৩৭)। তার ছেলে ইসমা‘ঈল (আ.) -এর প্রশংসা করে বলেন- إِنَّه كَانَ صَادِقَ الْوَعْدِ ‘‘...সে ছিল ওয়া‘দা রক্ষায় (দৃঢ়) সত্যবাদী...’’- (সূরাহ্ মারইয়াম ১৯ : ৫৪)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ সকল ‘আলিম এ ব্যাপারে একমত যে, যদি কেউ কারো সাথে এমন বিষয়ের ওয়া‘দা করে যা হারাম নয় তা পালন করা উচিত। এটা কি ওয়াজিব না মুস্তাহাব- এ ব্যাপারে মতবিরোধ রয়েছে, ইমাম শাফি‘ঈ এবং আবূ হানীফাহ্ (রহিমাহুমাল্লাহ) এবং জামহূর ‘আলিমের মতে এটা মুস্তাহাব। যদি ছেড়ে দেয় তাহলে তার ফাযীলাত ছুটে যাবে এবং সে কঠিন মাকরূহ কাজ করবে তবে গুনাহগার হবে না।

আবার একদল ‘আলিমের মতে এটা ওয়াজিব। (‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৯৮৮)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)