৩২৩৪

পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - ভাগ-বণ্টন (সহধর্মিণীদের মধ্যে পালা নিরূপণ প্রসঙ্গে)

৩২৩৪-[৬] আবূ বকর ইবনু ’আব্দুর রহমান হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মু সালামাহ্ (রাঃ)-কে বিয়ে করার পর তাঁর খিদমাতে থাকাকালীন ভোরে উঠে বললেন, তুমি তোমার বংশের নিকট সম্মানহানী হবে না; যদি তুমি ইচ্ছা কর তবে আমি তোমার নিকট সাতদিন অবস্থান করব। এভাবে অন্য স্ত্রীগণের নিকটও সাতদিন করে থাকব। আর যদি তুমি ইচ্ছা কর তবে তোমার নিকট তিনদিন অবস্থান করব এবং তিনদিন করে পালা বণ্টন করব। তিনি [উম্মু সালামাহ্ (রাঃ)] বললেন, তবে তিনদিন করে পালা বণ্টন করুন।

অপর বর্ণনায় আছে যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বলেন : কুমারীর জন্য সাতদিন, আর (পূর্ব) বিবাহিতার জন্য তিনদিন। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْقَسْمِ

وَعَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِين تَزَوَّجَ أُمَّ سَلَمَةَ وَأَصْبَحَتْ عِنْدَهُ قَالَ لَهَا: «لَيْسَ بِكِ عَلَى أَهْلِكِ هَوَانٌ إِنْ شِئْتِ سَبَّعْتُ عِنْدَكِ وَسَبَّعْتُ عِنْدَهُنَّ وَإِنْ شِئْتِ ثَلَّثْتُ عِنْدَكِ وَدُرْتُ» . قَالَتْ: ثَلِّثْ. وَفِي رِوَايَةٍ: إِنَّهُ قَالَ لَهَا: «لِلْبِكْرِ سَبْعٌ وَلِلثَّيِّبِ ثَلَاثٌ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي بكر بن عبد الرحمن: ان رسول الله صلى الله عليه وسلم حين تزوج ام سلمة واصبحت عنده قال لها: «ليس بك على اهلك هوان ان شىت سبعت عندك وسبعت عندهن وان شىت ثلثت عندك ودرت» . قالت: ثلث. وفي رواية: انه قال لها: «للبكر سبع وللثيب ثلاث» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মু সালামাহ (রাঃ)-কে বিয়ে করার পর তিনি তাকে বলেন, আমার সাথে তোমার বিয়ের কারণে তোমার বংশের মর্যাদার কোনো হানি ঘটবে না। এখানে ‘আহ্ল’ দ্বারা বংশকে বুঝানো হয়েছে। কেউ কেউ বলেন, ‘আহ্ল’ দ্বারা স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কেই বুঝানো হয়েছে, কেননা স্বামী-স্ত্রীর প্রত্যেকেই একে অপরের ‘আহ্ল’। এ অবস্থায় অর্থ হবে তোমার নিকট তিনদিন অবস্থান করায় তোমার প্রতি আমার আগ্রহ ভালোবাসার কমতি বুঝাবে না, কেননা অকুমারীর কাছে তিনদিন অবস্থান করাই বিধান। তবে তুমি যদি চাও তাহলে আমি তোমার নিকট সাতদিনই অবস্থান করতে পারি। কিন্তু তখন অন্যান্যা স্ত্রীদের নিকটও সাতদিন অবস্থান করতে হবে।

হিদায়াহ্ গ্রন্থাকার বলেনঃ স্ত্রীদের মধ্যে গমন পরিক্রমায় সমতাই উদ্দেশ্য, চাই একদিনের হোক অথবা দুই অথবা তিন বা ততোধিক দিনের হোক। এক্ষেত্রে নতুন-পুরাতনের মাঝে কোনো ব্যবধান নেই।

ইবনুল হুমাম (রহঃ) বলেনঃ আমার ধারণা যে, অধিক দিন একত্রিত করা ক্ষতিজনক, তবে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে যদি সম্মত হয়ে করে সেটা ভিন্নকথা।

কেউ কেউ বলেছেন, স্বামী স্ত্রীকে তিনের ইখতিয়ার দিবে, তিনদিন নিলে এই তিন অন্যের মধ্যে বণ্টন হবে না, আর সাতদিনের ইখতিয়ার গ্রহণ করলে তিনের অতিরিক্ত দিনগুলো অন্যান্য স্ত্রীদের মধ্যেও পালাবণ্টন হবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মু সালামাহ্ (রাঃ)-কে বলেছিলেন, তুমি চাইলে তোমার নিকট আমার অবস্থানের জন্য সাতদিনই নির্ধারণ করতে পার; নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথার অর্থ হলো তিনদিনের পর তুমি চাইলে সাতদিনই অবস্থান করব যাতে তোমার গোত্রের লোকেরা খুশী থাকে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মু সালামাহ্ (রাঃ)-কে কুমারী নারীর মর্যাদা দান করেছেন এবং তার গোত্রের সম্মান অক্ষুণ্ণ রেখেছেন।

‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেছেনঃ নবপরিণিতা কুমারী অকুমারীর জন্য বিশেষ সাত অথবা তিন দিনের বিষয়ে ফুকাহাগণ বিভিন্ন মত ব্যক্ত করেছেন। অনেকেই বলেছেন, উল্লেখিত দিনগুলো অন্যান্য স্ত্রীদের মধ্যে পালাক্রমের হিসেবে আসবে না।

‘আল্লামা তূরিবিশ্তী (রহঃ) বলেন, কুমারীর জন্য সাতদিন এবং অকুমারীর জন্য তিনদিন এটা সুন্নাত। নববিবাহিতাদের জন্য এই বিশেষ দিনগুলো তাদের সাথে ঘনিষ্ঠ এবং অন্তরঙ্গ হওয়ার জন্য শারী‘আতের বিশেষ ব্যবস্থা। এক্ষেত্রে কুমারীর জন্য বেশী দিন ধার্য করা হয়েছে তার ভীতি ও ঘৃণা দূরীভূত হওয়া এবং হৃদয়ের প্রশান্তি ও স্থিতির জন্য, এটা তার বিশেষ ফযীলত। ‘উলামাদের অধিকাংশের মত হলো, এটা নববিবাহিতাদের বাসর পাওনা। (শারহে মুসলিম ৯/১০ খন্ড, হাঃ ১৪৬০; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح)