২৪৬৭

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আশ্রয় প্রার্থনা করা

২৪৬৭-[১১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (দু’আয়) বলতেনঃ ’’আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’ঊযুবিকা মিনাল ফাকরি, ওয়াল কিল্লাতি ওয়ায্ যিল্লাতি ওয়া মিন্ আন্ আযলিমা আও উযলামা’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে অস্বচ্ছলতা, স্বল্পতা, অপমান-অপদস্ত হতে আশ্রয় প্রার্থনা করি এবং আমি অত্যাচারী অথবা অত্যাচারিত হওয়া হতেও তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি। (আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُولُ: «اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْفَقْرِ وَالْقِلَّةِ وَالذِّلَّةِ وَأَعُوذُ مِنْ أَنْ أَظْلِمَ أَوْ أُظْلَمَ» رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ

وعن ابي هريرة ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يقول: «اللهم اني اعوذ بك من الفقر والقلة والذلة واعوذ من ان اظلم او اظلم» رواه ابو داود والنساىي

ব্যাখ্যা: (الْفَقْرِ) ‘‘আল ফাকর’’ বা দরিদ্রতা বলতে এখানে সম্পদহীনতা বা সম্পদের স্বল্পতাকে বুঝানো হচ্ছে। সম্পদ না থাকলে বা কম থাকলে ধৈর্য ধারণ করতে না পারা এক ধরনের ফিতনা। তাই এ থেকে আশ্রয় চাইতে বলা হয়েছে। তবে কারো মতে এখানে অন্তরের দারিদ্র্যতাকে বুঝানো হয়েছে। সম্পদশালী ব্যক্তি যখন সম্পদের প্রতি লোভী হয়ে আরো বেশি অর্থ-সম্পদ অর্জনে ঝাপিয়ে পড়ে তখন সে মূলত ধনী হলেও অন্তরের দিক থেকে ফকীর।

(الْقِلَّةِ) ‘‘আল কিল্লাহ্’’ বা স্বল্পতা দ্বারা এখানে সম্পদের এমন স্বল্পতা বুঝানো হয়েছে যতটুকু সম্পদ না থাকায় সে সঠিকভাবে ‘ইবাদাত পালন করতে পারে না। কারো মতে এর দ্বারা ধৈর্যের স্বল্পতা বা সাহায্যকারীর স্বল্পতা বুঝাচ্ছে। কারো কারো মতে, এর দ্বারা সৎ কাজের সুযোগের ও উত্তম স্বভাবের স্বল্পতা বুঝানো হচ্ছে।

(الذِّلَّةِ) ‘‘আয্ যিল্লাহ্’’ বা অপমান হতে আশ্রয় চাওয়া অর্থাৎ মানুষের চোখে অপমানিত ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের শিকার হওয়া থেকে আশ্রয় চাওয়া। কারো কারো মতে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে গুনাহের কারণে যে অপমানের সম্মুখীন হতে হয় তা।

উল্লেখ্য যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী ‘‘হে আল্লাহ! আমাকে মিসকীন হিসেবে বাঁচিয়ে রাখুন’’- এর সাথে অত্র হাদীসে দারিদ্র্যতা থেকে আশ্রয় চাওয়ার কোন বিরোধ নেই। কারণ ঐ হাদীসে মিসকীন বলতে বিনয়, নম্রতা, অহংকারী না হওয়াকে বুঝানো হয়েছে; ফকীর হওয়াকে নয়।

এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার জন্য মূল গ্রন্থ ‘‘মির্‘আত’’-এ সংশিস্নষ্ট হাদীসের আলোচনা দেখুন।

অত্যাচার করা বলতে যে কোন ধরনের অত্যাচার (যুলম) হোক তা নিজের ওপর কিংবা অপরের ওপর। আল্লাহর অবাধ্যতার মাধ্যমে নিজের ওপর যে যুলম করা হয় তাও এর অন্তর্ভুক্ত। যুলম বলতে মূলত কোন বস্ত্তকে ঐ বস্ত্তর জন্যে নির্ধারিত স্থানে না রাখা অথবা অন্য কারো অধিকার লঙ্ঘন করা। নিজে অত্যাচারিত হওয়া বলতে অন্য কারো দ্বারা যুল্মের শিকার হওয়া। (অত্যাচার করা যেমন অন্যায় অত্যাচারিত হওয়াও ঠিক তেমনই অন্যায়।)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)