৯২৯

পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ ও তার মর্যাদা

৯২৯-[১১] উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে গিয়ে আরয করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি আপনার উপর অনেক বেশী দরূদ পাঠ করি। আপনি আমাকে বলে দিন আমি (দু’আর জন্য যতটুকু সময় বরাদ্দ করে রেখেছি তার) কতটুকু সময় আপনার উপর দরূদ পাঠাবার জন্য নির্দিষ্ট করব? উত্তরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার মন যা চায়। আমি আরয করলাম, যদি এক-তৃতীয়াংশ করি? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার মন যা চায়, যদি আরো বেশী কর তাহলে তা তোমার জন্য কল্যাণকর। আমি আরয করলাম, যদি অর্ধেক সময় নির্ধারণ করি? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমার মন যতটুকু চায় কর। যদি আরো বেশী নির্ধারণ কর তাহলে তোমর জন্যই ভালো। আমি বললাম, যদি দুই-তুতীয়াংশ করি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার মন যা চায়। যদি আরো বেশি নির্ধারণ কর তোমার জন্যই কল্যাণকর। আমি আরয করলাম, তাহলে আমি আমার দু’আর সবটুকু সবসময়ই আপনার উপর দরূদ পড়ার কাজে নির্দিষ্ট করে দেব। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তবে এটাই তোমার জন্য যথেষ্ট হবে, তোমার দীন-দুনিয়ার মকসুদ পূর্ণ হবে এবং তোমার গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُكْثِرُ الصَّلَاةَ عَلَيْكَ فَكَمْ أَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلَاتِي؟ فَقَالَ: «مَا شِئْتَ» قُلْتُ: الرُّبُعَ؟ قَالَ: «مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ» . قُلْتُ: النِّصْفَ؟ قَالَ: «مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ» قُلْتُ: فَالثُّلُثَيْنِ؟ قَالَ: «مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ» قُلْتُ: أَجْعَلُ لَكَ صَلَاتِي كُلَّهَا؟ قَالَ: «إِذا يكفى همك وَيكفر لَك ذَنْبك» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن ابي بن كعب قال: قلت: يا رسول الله اني اكثر الصلاة عليك فكم اجعل لك من صلاتي؟ فقال: «ما شىت» قلت: الربع؟ قال: «ما شىت فان زدت فهو خير لك» . قلت: النصف؟ قال: «ما شىت فان زدت فهو خير لك» قلت: فالثلثين؟ قال: «ما شىت فان زدت فهو خير لك» قلت: اجعل لك صلاتي كلها؟ قال: «اذا يكفى همك ويكفر لك ذنبك» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: উবাই ইবনু কা‘ব বলেন, রাতের দু’ তৃতীয়াংশ যখন অতিবাহিত হত তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়াতেন এবং বলতেন, হে মানব সকল! তোমরা আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণ কর। অতঃপর সেদিন পশ্চাতে প্রকম্পিত হয়ে মৃত্যু আসবে। উবাই বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি আপনার প্রতি বেশী বেশী দরূদ পাঠ করি (সালাত তথা দরূদ দ্বারা উদ্দেশ দু‘আ) ‘‘অতএব আমার সালাতের কত সংখ্যা আপনার জন্য নির্ধারণ করব?’’ আমার দু‘আর অধিকাংশ দু‘আ আপনার উপর দরূদ পাঠের জন্য কী পরিমাণ সময় নির্ধারিত করব?

(أَجْعَلُ لَكَ صَلَاتِيْ كُـلَّهَا) আমার দু‘আর পুরা সময়টা আপনার ওপর দরূদ পাঠের মাধ্যমে শেষ করব।

(تُكْفـى هَمَّكَ) তাহলে তোমার সব আশা আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হবে।

(هَمٌّ) ‘হাম্মুন’ দ্বারা উদ্দেশ্য মানুষ দুনিয়া ও আখিরাতের বিষয়ে যা কামনা করে। অর্থাৎ- তুমি যখন তোমার দু‘আর সব সময়টুকু রসূলের প্রতি দরূদে ব্যয় করবে তখন দুনিয়া ও আখিরাতের বিষয়ে সকল চিন্তা দূরীভূত হওয়ার জন্য যথেষ্ট হবে।

আর আকাঙ্ক্ষা পূরণ ও গুনাহ মাফের বিষয়টি দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের সমষ্টি। নিঃসন্দেহে যার আকাঙ্ক্ষা ও উদ্বিগ্ন পূরণে আল্লাহ যথেষ্ট হোন সে দুনিয়ার সমস্ত কষ্ট-ক্লেশ ও ঝামেলা হতে নিরাপদ হয়। কেননা প্রত্যেক কষ্ট, ক্লেশ পরীক্ষারই একটি চিহ্ন থাকে তা যতই সহজ ও সামান্য হোক না কেন।

আর আল্লাহ যার গুনাহ মাফ করে দিবেন সে আখিরাতের দুশ্চিন্তা ও পরীক্ষা হতে মুক্ত হবে। কেননা সেখানে গুনাহের কারণে বান্দা ধ্বংস হবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)