৪৬৯৩

পরিচ্ছেদঃ ২৯. খারেজীদের সাথে যুদ্ধ সম্পর্কে।

৪৬৯৩. হাসান ইবন আলী (রহঃ) ..... যায়দ ইবন ওয়াহাব যুহানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আলী (রাঃ)-এর ঐ সেনাবাহিনীর সাথে ছিলাম, যারা খারিজীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য গিয়েছিল। তখন আলী (রাঃ) বলেনঃ হে লোকগণ! আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এরূপ বলতে শুনেছিঃ আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু লোক সৃষ্টি হবে, যারা কুরআন এমন সুন্দরভাবে পড়বে যে, তাদের তুলনায় তোমাদের কিরাত কিছুই হবে না। তাদের সালাতের তুলনায় তোমাদের সালাত কিছুই হবে না এবং তাদের রোযার তুলনায় তোমাদের রোযা কিছুই হবে না। বস্তুত তারা এ মনে করে কুরআন পড়ে যে, তারা এর ছওয়াব পাবে, কিন্তু আসলে তারা এর কারণে শাস্তিপ্রাপ্ত হবে। তাদের নামায তাদের গলার নীচে নামবে না এবং তারা ইসলাম থেকে এরুপ বেরিয়ে যাবে, যেরূপ ধনুক থেকে তীর বেরিয়ে যায়।

যারা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, তাদের বিনিময় সম্পর্কে আল্লাহ্‌ তা’আলা তার নবীর যবানীতে যা বর্ণনা করেছেন, তা যদি তারা জানতো, তবে তারা সব ধরনের আমল ছেড়ে দিত। তাদের পরিচয় এই যে, তাদের মাঝে এমন এক ব্যক্তি থাকবে, যারা বাহুমূল থাকবে, কিন্তু তার হাত থাকবে না। তার সে বাহুতে স্তনের বোঁটার মত থাকবে, যার উপর সাদা পশম হবে। কী ব্যাপার! তোমরা মুআবিয়া এবং শামবাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য যাচ্ছ, অথচ তোমরা তাদেরকে তোমাদের মাল ও সন্তান-সন্ততিদের কাছে রেখে যাচ্ছ! (যারা তাদের ক্ষতি করবে।) আল্লাহ্‌র শপথ! আমার মনে হয়, এরাই তারা, (যাদের সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন), যারা হারাম রক্ত প্রবাহিত করেছে এবং লোকদের চারণভূমি লুন্ঠন করেছে। কাজেই, তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গমন কর।

রাবী সালামা ইবন কুহায়ল (রহঃ) বলেনঃ যায়দ ইবন ওয়াহাব (রহঃ) আমাকে এমন একস্থানে নিয়ে যান, যেখানে আমরা একটা পুলের উপর দিয়ে যাই; সেখানে দু’পক্ষের সৈন্যরা মুখোমুখি হয় এবং সেখানে খারিজীদের নেতা আবদুল্লাহ ইবন ওয়াহাবও উপস্থিত ছিল। সে তার সেনাবাহিনীর প্রতি এরূপ নির্দেশ দেয়ঃ তোমরা বল্লম ফেলে দাও এবং খাপ থেকে তরবারি বের কর। কেননা, আমার আশংকা হচ্ছে, এরা তোমাদের সেরূপ বিচ্ছিন্ন করবে, যেরূপ ’হারুরার’ দিন করেছিল।

রাবী বলেনঃ তার এ নির্দেশ পাওয়ার পর সৈন্যরা তাদের বল্লম ফেলে দিয়ে তরবারি ধারণ করে। তখন মুসলিমরা বল্লম নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং তাদের হত্যা করে গাদা দিয়ে রাখে।

রাবী বলেনঃ এ দিনের যুদ্ধে আলী (রাঃ)-এর পক্ষে মাত্র দু’জন শহীদ হন। এরপর আলী (রাঃ) এরূপ নির্দেশ দেনঃ লাশের স্তুপের মধ্য থেকে মাখদাজ অর্থাৎ ছোট হাত-বিশিষ্ট ব্যক্তির লাশ বের কর। কিন্তু সৈন্যরা তার লাশের সন্ধান পায় না।

রাবী বলেনঃ অবশেষে আলী (রাঃ) সেখানে যান, যেখানে লাশ গাদা দেয়া ছিল এবং বলেনঃ এদের আলাদা করে রাখ। এরপর সমস্ত লাশকে আলাদা করে রাখার পর দেখা যায় যে, সে ব্যক্তির লাশ সবার নীচে মাটির উপর পড়ে আছে। এ সময় তিনি ’আল্লাহ্‌ আকবর’ ধ্বনি দিয়ে বলেনঃ মহান আল্লাহ্‌ সত্য বলেছেন এবং তাঁর রাসূল তা আমাদের কাছে পৌছে দিয়েছেন। একথা শুনে উবায়দা সালমানী (রাঃ) আলী (রাঃ)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে বলেনঃ ইয়া আমীরুল মু’মিনীন। ঐ জাতের কসম! যিনি ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই, আপনি কি ইহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছেন? জবাবে তিনি বলেনঃ ঐ আল্লাহ্‌ যিনি ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই, আমি ইহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। বাকী তিনবার শপথপূর্বক এর জবাব দেন।

باب فِي قَتْلِ الْخَوَارِجِ

حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي سُلَيْمَانَ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي زَيْدُ بْنُ وَهْبٍ الْجُهَنِيُّ، ‏:‏ أَنَّهُ كَانَ فِي الْجَيْشِ الَّذِينَ كَانُوا مَعَ عَلِيٍّ عَلَيْهِ السَّلاَمُ الَّذِينَ سَارُوا إِلَى الْخَوَارِجِ فَقَالَ عَلِيٌّ عَلَيْهِ السَّلاَمُ ‏:‏ أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏:‏ ‏ "‏ يَخْرُجُ قَوْمٌ مِنْ أُمَّتِي يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَيْسَتْ قِرَاءَتُكُمْ إِلَى قِرَاءَتِهِمْ شَيْئًا وَلاَ صَلاَتُكُمْ إِلَى صَلاَتِهِمْ شَيْئًا وَلاَ صِيَامُكُمْ إِلَى صِيَامِهِمْ شَيْئًا، يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ يَحْسَبُونَ أَنَّهُ لَهُمْ وَهُوَ عَلَيْهِمْ، لاَ تُجَاوِزُ صَلاَتُهُمْ تَرَاقِيَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الإِسْلاَمِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ، لَوْ يَعْلَمُ الْجَيْشُ الَّذِينَ يُصِيبُونَهُمْ مَا قُضِيَ لَهُمْ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّهِمْ صلى الله عليه وسلم لَنَكَلُوا عَلَى الْعَمَلِ، وَآيَةُ ذَلِكَ أَنَّ فِيهِمْ رَجُلاً لَهُ عَضُدٌ وَلَيْسَتْ لَهُ ذِرَاعٌ، عَلَى عَضُدِهِ مِثْلُ حَلَمَةِ الثَّدْىِ عَلَيْهِ شَعَرَاتٌ بِيضٌ ‏"‏ ‏.‏ أَفَتَذْهَبُونَ إِلَى مُعَاوِيَةَ وَأَهْلِ الشَّامِ وَتَتْرُكُونَ هَؤُلاَءِ يَخْلُفُونَكُمْ فِي ذَرَارِيِّكُمْ وَأَمْوَالِكُمْ وَاللَّهِ إِنِّي لأَرْجُو أَنْ يَكُونُوا هَؤُلاَءِ الْقَوْمَ، فَإِنَّهُمْ قَدْ سَفَكُوا الدَّمَ الْحَرَامَ، وَأَغَارُوا فِي سَرْحِ النَّاسِ فَسِيرُوا عَلَى اسْمِ اللَّهِ ‏.‏ قَالَ ‏:‏ سَلَمَةُ بْنُ كُهَيْلٍ ‏:‏ فَنَزَّلَنِي زَيْدُ بْنُ وَهْبٍ مَنْزِلاً مَنْزِلاً حَتَّى مَرَّ بِنَا عَلَى قَنْطَرَةٍ قَالَ فَلَمَّا الْتَقَيْنَا وَعَلَى الْخَوَارِجِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ الرَّاسِبِيُّ فَقَالَ لَهُمْ ‏:‏ أَلْقُوا الرِّمَاحَ وَسُلُّوا السُّيُوفَ مِنْ جُفُونِهَا، فَإِنِّي أَخَافُ أَنْ يُنَاشِدُوكُمْ كَمَا نَاشَدُوكُمْ يَوْمَ حَرُورَاءَ قَالَ ‏:‏ فَوَحَّشُوا بِرِمَاحِهِمْ وَاسْتَلُّوا السُّيُوفَ وَشَجَرَهُمُ النَّاسُ بِرِمَاحِهِمْ - قَالَ - وَقَتَلُوا بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضِهِمْ ‏.‏ قَالَ ‏:‏ وَمَا أُصِيبَ مِنَ النَّاسِ يَوْمَئِذٍ إِلاَّ رَجُلاَنِ فَقَالَ عَلِيٌّ عَلَيْهِ السَّلاَمُ ‏:‏ الْتَمِسُوا فِيهِمُ الْمُخْدَجَ فَلَمْ يَجِدُوا قَالَ ‏:‏ فَقَامَ عَلِيٌّ رضى الله عنه بِنَفْسِهِ حَتَّى أَتَى نَاسًا قَدْ قُتِلَ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ فَقَالَ ‏:‏ أَخْرِجُوهُمْ فَوَجَدُوهُ مِمَّا يَلِي الأَرْضَ فَكَبَّرَ وَقَالَ ‏:‏ صَدَقَ اللَّهُ وَبَلَّغَ رَسُولُهُ ‏.‏ فَقَامَ إِلَيْهِ عَبِيدَةُ السَّلْمَانِيُّ فَقَالَ ‏:‏ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ وَاللَّهِ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ لَقَدْ سَمِعْتَ هَذَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏:‏ إِي وَاللَّهِ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ حَتَّى اسْتَحْلَفَهُ ثَلاَثًا وَهُوَ يَحْلِفُ ‏.‏

حدثنا الحسن بن علي، حدثنا عبد الرزاق، عن عبد الملك بن ابي سليمان، عن سلمة بن كهيل، قال اخبرني زيد بن وهب الجهني، ‏:‏ انه كان في الجيش الذين كانوا مع علي عليه السلام الذين ساروا الى الخوارج فقال علي عليه السلام ‏:‏ ايها الناس اني سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ‏:‏ ‏ "‏ يخرج قوم من امتي يقرءون القران ليست قراءتكم الى قراءتهم شيىا ولا صلاتكم الى صلاتهم شيىا ولا صيامكم الى صيامهم شيىا، يقرءون القران يحسبون انه لهم وهو عليهم، لا تجاوز صلاتهم تراقيهم يمرقون من الاسلام كما يمرق السهم من الرمية، لو يعلم الجيش الذين يصيبونهم ما قضي لهم على لسان نبيهم صلى الله عليه وسلم لنكلوا على العمل، واية ذلك ان فيهم رجلا له عضد وليست له ذراع، على عضده مثل حلمة الثدى عليه شعرات بيض ‏"‏ ‏.‏ افتذهبون الى معاوية واهل الشام وتتركون هولاء يخلفونكم في ذراريكم واموالكم والله اني لارجو ان يكونوا هولاء القوم، فانهم قد سفكوا الدم الحرام، واغاروا في سرح الناس فسيروا على اسم الله ‏.‏ قال ‏:‏ سلمة بن كهيل ‏:‏ فنزلني زيد بن وهب منزلا منزلا حتى مر بنا على قنطرة قال فلما التقينا وعلى الخوارج عبد الله بن وهب الراسبي فقال لهم ‏:‏ القوا الرماح وسلوا السيوف من جفونها، فاني اخاف ان يناشدوكم كما ناشدوكم يوم حروراء قال ‏:‏ فوحشوا برماحهم واستلوا السيوف وشجرهم الناس برماحهم - قال - وقتلوا بعضهم على بعضهم ‏.‏ قال ‏:‏ وما اصيب من الناس يومىذ الا رجلان فقال علي عليه السلام ‏:‏ التمسوا فيهم المخدج فلم يجدوا قال ‏:‏ فقام علي رضى الله عنه بنفسه حتى اتى ناسا قد قتل بعضهم على بعض فقال ‏:‏ اخرجوهم فوجدوه مما يلي الارض فكبر وقال ‏:‏ صدق الله وبلغ رسوله ‏.‏ فقام اليه عبيدة السلماني فقال ‏:‏ يا امير المومنين والله الذي لا اله الا هو لقد سمعت هذا من رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال ‏:‏ اي والله الذي لا اله الا هو حتى استحلفه ثلاثا وهو يحلف ‏.‏


Salamah b. Kuhail said:
Zaid b. Wahb al-Juhani told us that he was in the army which proceeded to (fight with) the Khawarij in the company of `Ali. `Ali then said: O people! I heard the Messenger of Allah (ﷺ) say: there will appear from among my community people who recite the Qur'an, and your recitation has no comparison with their recitation, and your prayer has no comparison with their prayer, and your fasts have no comparison with their fasts. They will recite the Qur'an thinking that it is beneficial for them, while it is harmful for them. Their prayer will not pass their collar-bones. They will swerve from Islam as an arrow goes through the animal shot at. If the army that is approaching them knows what (reward) has been decided for them at the tongue of their Prophet (ﷺ), they would leave (other good) activities. The sign of that is that among them there will be a man who has an upper arm, but not hand; on his upper arm there will be something like the nipple of a female breast, having white hair thereon. Will you go to Mu`awiyah and the people of Syria, and leave them behind among your children and property? I swear by Allah, I hope these are the same people, for they shed the blood unlawfully, and attacked the cattle of the people so go on in the name of Allah. Salamah b. Kuhail said: Zaid b. Wahb then informed me of all the halting places one by one, (saying): Until we passed a bridge. When we fought with each other, `Abd Allah b. Wahb al-Rasibi, who was the leader of the Khawarij, said to them: Throw away the lances and pull out the swords from their sheaths, for I am afraid they will adjure you as they had adjured on the day of Harura. So they threw away their lances and pulled out their swords, and the people pierced them with their lances. They were killed (lying one on the other). On that day only two persons of the partisans (of `Ali) were afflicted. `Ali said: Search for the man with the crippled hand. But they could not find him. Then `Ali got up himself and went to the people who had been killed and were lying on one another. He said: Take them out. They found him just near the ground. So he shouted: Allah is Most Great! He said: Allah spoke the truth, and His Apostle has conveyed. `Ubaidat al-Salmani stood up to him, saying: Commander of the Faithful! Have you heard it from the Messenger of Allah (ﷺ)? He said: Yes, by him, there is no God but He. He put to swear thrice and he swore.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সুনান আবূ দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩৫/ সুন্নাহ (كتاب السنة)