২২৯৩

পরিচ্ছেদঃ ১৮৬. মৃত স্বামীর জন্য স্ত্রীর শোক প্রকাশ।

২২৯৩. আল্ কা’নবী .... যায়নাব বিনত আবূ সালামা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি তাকে (হামিদ ইবন রাফি’) এ তিনটি হাদীস সম্পর্কে খবর দিয়েছেন। যায়নাব (রাঃ) বলেন, একদা আমি উম্মে হাবীবার নিকট গমন করি। আর এ সময় তার পিতা আবূ সুফইয়ান (রাঃ) মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এ সময় তিনি হলুদ রং বিশিষ্ট সুগন্ধি তেল অথবা অন্য কিছুর জন্য আহবান করেন। তদ্দরা একজন দাসী তাঁর কেশে তেল মেখে দেয়। এরপর তিনি চেহারায় তেল মর্দন করেন। অবশেষে তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! সুগন্ধি দ্রব্য ব্যবহারের আমার কোন প্রয়োজন নেই; তবে আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইরশাদ করতে শুনেছিঃ যে সমস্ত মহিলা আল্লাহর প্রতি এবং শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে, তাদের জন্য মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে তিনরাতের অধিক শোক প্রকাশ করা হালাল নয়। তবে স্বামীদের জন্য চারমাস দশদিন শোক প্রকাশ করবে।

যায়নাব বিনতে আবূ সালামা (রাঃ) আরো বলেন, একদা আমি যায়নাব বিনতে জাহশের নিকট উপস্থিত হই এবং এ সময় তার ভাই মৃত্যুবরণ করে। তিনি সুগন্ধি দ্রব্য চান এবং তা ব্যবহার করেন। এরপর বলেন, আমার সুগন্ধি দ্রব্য ব্যবহারের কোন প্রয়োজন নেই, তবে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মিম্বরের উপর ইরশাদ করতে শুনেছি, যে সমস্ত মহিলা আল্লাহ্ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে, তাদের জন্য কোন মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে তিন রাতের অধিক শোক প্রকাশ করা বৈধ নয়। অবশ্য তারা স্বামীদের জন্য চার মাস দশ দিন শোক প্রকাশ করবে।

যায়নাব বিনত আবূ সালামা (রাঃ) আরো বর্ণনা করেন, আমি আমার মাতা উম্মে সালামাকে বলতে শুনেছি, একদা জনৈকা রমনী রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলে, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমার কন্যার স্বামী মৃত্যুবরণ করেছে এবং তার চক্ষু অভিযোগ করছে। কাজেই আমি কি তাকে পুনরায় বিবাহ দিব? রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’বার বা তিনবার বলেন, না। আর তিনি এ ’না’ শব্দটি নিষেধাজ্ঞার জন্য ব্যবহার করেন। এরপর রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, বরং তার জন্য ইদ্দতের সময়সীমা হল চার মাস দশ দিন। আর জাহিলিয়াতের যুগে তোমাদের স্ত্রীকে (যাদের স্বামী মারা যেত) বু’রাতে এক বছরের জন্য নিক্ষেপ করা হতো।

রাবী হামিদ বলেন, তখন আমি যায়নাবকে জিজ্ঞসা করি, বু’রাতে এক বছরের জন্য নিক্ষেপের অর্থ কী? যায়নাব (রাঃ) বলেন, যখন কোন স্ত্রীলোকের স্বামী মারা যেত, তখন সে একটি কুঁড়ে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করতো, খারাপ কাপড় পরিধান করতো এবং সুগন্ধি দ্রব্য ব্যবহার করতো না। আর এরূপে এক বছর কাটিয়ে দিত। এরপর তার নিকট কোন প্রাণী যেমন গাধা, বকরী অথবা পক্ষী আনা হতো এবং উহা তার শরীর স্পর্শ করতো, তবে খুব কমই এমন হতো যে, জন্তুটি জীবিত থাকত, বরং অধিকাংশই মরে যেত। তারপর তাকে বের করে এনে জন্তুুর একটি বিষ্ঠা দেয়া হতো, সে উহা নিক্ষেপ করতো। তারপর ইদ্দতান্তে সে সে স্থান হতে বের হয়ে আসতো। এরপর সে হালাল হতো এবং তার খুশিমতো সুগন্ধি দ্রব্য ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারত।

ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন,حفش (হাফস) হল ছোট ঘর বা কুঁড়ে ঘর।

باب إِحْدَادِ الْمُتَوَفَّى عَنْهَا زَوْجُهَا

حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ نَافِعٍ، عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ أَبِي سَلَمَةَ، أَنَّهَا أَخْبَرَتْهُ بِهَذِهِ الأَحَادِيثِ الثَّلاَثَةِ، قَالَتْ زَيْنَبُ دَخَلْتُ عَلَى أُمِّ حَبِيبَةَ حِينَ تُوُفِّيَ أَبُوهَا أَبُو سُفْيَانَ فَدَعَتْ بِطِيبٍ فِيهِ صُفْرَةٌ خَلُوقٌ أَوْ غَيْرُهُ فَدَهَنَتْ مِنْهُ جَارِيَةً ثُمَّ مَسَّتْ بِعَارِضَيْهَا ثُمَّ قَالَتْ وَاللَّهِ مَا لِي بِالطِّيبِ مِنْ حَاجَةٍ غَيْرَ أَنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏"‏ لاَ يَحِلُّ لاِمْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ أَنْ تُحِدَّ عَلَى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلاَثِ لَيَالٍ إِلاَّ عَلَى زَوْجٍ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا ‏"‏ ‏.‏ قَالَتْ زَيْنَبُ وَدَخَلْتُ عَلَى زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ حِينَ تُوُفِّيَ أَخُوهَا فَدَعَتْ بِطِيبٍ فَمَسَّتْ مِنْهُ ثُمَّ قَالَتْ وَاللَّهِ مَا لِي بِالطِّيبِ مِنْ حَاجَةٍ غَيْرَ أَنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ ‏"‏ لاَ يَحِلُّ لاِمْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ أَنْ تُحِدَّ عَلَى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلاَثِ لَيَالٍ إِلاَّ عَلَى زَوْجٍ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا ‏"‏ ‏.‏ قَالَتْ زَيْنَبُ وَسَمِعْتُ أُمِّي أُمَّ سَلَمَةَ تَقُولُ جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ ابْنَتِي تُوُفِّيَ عَنْهَا زَوْجُهَا وَقَدِ اشْتَكَتْ عَيْنَهَا أَفَنَكْحُلُهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ لاَ ‏"‏ ‏.‏ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا كُلُّ ذَلِكَ يَقُولُ ‏"‏ لاَ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِنَّمَا هِيَ أَرْبَعَةُ أَشْهُرٍ وَعَشْرٌ وَقَدْ كَانَتْ إِحْدَاكُنَّ فِي الْجَاهِلِيَّةِ تَرْمِي بِالْبَعْرَةِ عَلَى رَأْسِ الْحَوْلِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ حُمَيْدٌ فَقُلْتُ لِزَيْنَبَ وَمَا تَرْمِي بِالْبَعْرَةِ عَلَى رَأْسِ الْحَوْلِ فَقَالَتْ زَيْنَبُ كَانَتِ الْمَرْأَةُ إِذَا تُوُفِّيَ عَنْهَا زَوْجُهَا دَخَلَتْ حِفْشًا وَلَبِسَتْ شَرَّ ثِيَابِهَا وَلَمْ تَمَسَّ طِيبًا وَلاَ شَيْئًا حَتَّى تَمُرَّ بِهَا سَنَةٌ ثُمَّ تُؤْتَى بِدَابَّةٍ حِمَارٍ أَوْ شَاةٍ أَوْ طَائِرٍ فَتَفْتَضُّ بِهِ فَقَلَّمَا تَفْتَضُّ بِشَىْءٍ إِلاَّ مَاتَ ثُمَّ تَخْرُجُ فَتُعْطَى بَعْرَةً فَتَرْمِي بِهَا ثُمَّ تُرَاجِعُ بَعْدُ مَا شَاءَتْ مِنْ طِيبٍ أَوْ غَيْرِهِ ‏.‏ قَالَ أَبُو دَاوُدَ الْحِفْشُ بَيْتٌ صَغِيرٌ ‏.‏

حدثنا القعنبي، عن مالك، عن عبد الله بن ابي بكر، عن حميد بن نافع، عن زينب بنت ابي سلمة، انها اخبرته بهذه الاحاديث الثلاثة، قالت زينب دخلت على ام حبيبة حين توفي ابوها ابو سفيان فدعت بطيب فيه صفرة خلوق او غيره فدهنت منه جارية ثم مست بعارضيها ثم قالت والله ما لي بالطيب من حاجة غير اني سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ‏"‏ لا يحل لامراة تومن بالله واليوم الاخر ان تحد على ميت فوق ثلاث ليال الا على زوج اربعة اشهر وعشرا ‏"‏ ‏.‏ قالت زينب ودخلت على زينب بنت جحش حين توفي اخوها فدعت بطيب فمست منه ثم قالت والله ما لي بالطيب من حاجة غير اني سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول وهو على المنبر ‏"‏ لا يحل لامراة تومن بالله واليوم الاخر ان تحد على ميت فوق ثلاث ليال الا على زوج اربعة اشهر وعشرا ‏"‏ ‏.‏ قالت زينب وسمعت امي ام سلمة تقول جاءت امراة الى رسول الله صلى الله عليه وسلم فقالت يا رسول الله ان ابنتي توفي عنها زوجها وقد اشتكت عينها افنكحلها فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ‏"‏ لا ‏"‏ ‏.‏ مرتين او ثلاثا كل ذلك يقول ‏"‏ لا ‏"‏ ‏.‏ ثم قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ‏"‏ انما هي اربعة اشهر وعشر وقد كانت احداكن في الجاهلية ترمي بالبعرة على راس الحول ‏"‏ ‏.‏ قال حميد فقلت لزينب وما ترمي بالبعرة على راس الحول فقالت زينب كانت المراة اذا توفي عنها زوجها دخلت حفشا ولبست شر ثيابها ولم تمس طيبا ولا شيىا حتى تمر بها سنة ثم توتى بدابة حمار او شاة او طاىر فتفتض به فقلما تفتض بشىء الا مات ثم تخرج فتعطى بعرة فترمي بها ثم تراجع بعد ما شاءت من طيب او غيره ‏.‏ قال ابو داود الحفش بيت صغير ‏.‏


Humaid ibn Nafi' reported the following three traditions on the authority of Zaynab, daughter of Abu Salamah:

Zainab said: I visited Umm Habibah when her father AbuSufyan, died. She asked for some yellow perfume containing saffron (khaluq) or something else. Then she applied it to a girl and touched her cheeks.

She said: I have no need of perfume, but I heard the Messenger of Allah (ﷺ) say: It is not lawful for a woman who believes in Allah and the Last Day to observe mourning for one who has died, more than three nights, except for four months and ten days in the case of a husband.

Zaynab said: I also visited Zaynab, daughter of Jahsh, when her brother died. She asked for some perfume and used it upon herself.

She then said: I have no need of perfume, but I heard the Messenger of Allah (ﷺ) say when he was on the pulpit: It is not lawful for a woman who believes in Allah and the Last Day to observe mourning for one who has died, more than three nights, except for four months and ten days in the case of a husband.

Zaynab said: I heard my mother, Umm Salamah, say: A woman came to the Messenger of Allah (ﷺ) and said: Messenger of Allah, the husband of my daughter has died, and she is suffering from sore eyes; may we put antimony in her eyes?

The Messenger of Allah (ﷺ) said: No. He said this twice or thrice. Each time he said: No. The Messenger of Allah (ﷺ) said: The waiting period is now four months and ten days. In pre-Islamic days one of you used to throw away a piece of dung at the end of a year.

Humayd said: I asked Zaynab: What do you mean by throwing away a piece of dung at the end of a year.

Zaynab replied: When the husband of a woman died, she entered a small cell and put on shabby clothes, not touching perfume or any other thing until a year passed. Then an animal such as donkey or sheep or bird was provided for her. She rubbed herself with it. The animal with which she rubbed herself rarely survived. She then came out and was given a piece of dung which she threw away. She then used perfume or something else which she desired.

Abu Dawud said: The Arabic word "hafsh" means a small cell.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সুনান আবূ দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৭/ তালাক (كتاب الطلاق)