পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - তিন তালাকপ্রাপ্তা রমণীর বর্ণনা

৩২৯৬-[২] ’আব্দুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হীলাকারী (২য় স্বামী) এবং যার জন্য হীলা করা হয় (তথা প্রথম স্বামীর), উভয়ের প্রতি অভিসম্পাত করেছেন। (দারিমী)[1]

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: لَعَنَ رسولُ الله المحلّلَ والمُحلَّلَ لَهُ. رَوَاهُ الدَّارمِيّ

عن عبد الله بن مسعود قال لعن رسول الله المحلل والمحلل له رواه الدارمي

ব্যাখ্যা: اَلْمُحَلِّلَ শব্দের প্রথম ‘লাম’ যের বিশিষ্ট। অর্থাৎ দ্বিতীয় স্বামী যে ত্বলাকের ইচ্ছায় বা তালাক দেয়ার শর্তে বিবাহ করেছে।

(وَالمُحلَّلَ لَه) এখানে প্রথম ‘লাম’ যবর বিশিষ্ট। অর্থাৎ প্রথম স্বামী যে তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়েছে।

কাযী বলেনঃ মুহাল্লিল হলো ঐ ব্যক্তি যে অন্যের তিন তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে এই উদ্দেশে বিবাহ করে যে, সহবাসের পর তাকে তালাক দিয়ে দিবে, যাতে করে তালাকদাতার জন্য বিবাহ বৈধ হয়ে যায়। সে যেন এই নারীকে বিবাহ এবং সহবাসের মাধ্যমে বৈধ করল। আর ‘মুহাল্লাল লাহূ’ হলো প্রথম স্বামী। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়কে অভিশাপ দেয়ার কারণ হলো, এতে মানবতাবোধ নষ্ট করা হয়, আত্মমর্যাদার ঘাটতি এবং নিজ আত্মসম্মানের তুচ্ছতা এবং তা বিলিন হয়ে যাওয়ার প্রমাণ বহন করে। ‘মুহাল্লাল লাহূ’র দিক থেকে এই অপমানকর বিষয়টি প্রকাশ্য। আর ‘মুহাল্লিল’ এর দিক থেকে অপমানকর, কেননা সে যেন অন্যের উদ্দেশে নিজেকে সহবাসের জন্য ধার দিল। কেননা সে এই স্ত্রীর সাথে সহবাস করছে যাতে ‘মুহাল্লাল লাহূ’র জন্য হালাল হয়ে যায়। এজন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন ব্যক্তিকে ভাড়া করা পাঠার সাথে তুলনা করেন।

তবে এ ধরনের বিবাহে ‘আকদ বা বিবাহ বাতিল হবে বলে প্রমাণ নেই। যদিও কেউ কেউ এমন বলে থাকেন। বরং হাদীস থেকে বিবাহ বিশুদ্ধ হয়ে যাওয়ার প্রমাণ মিলে। কেননা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিবাহকারীকে ‘মুহাল্লিল’ তথা বৈধকারী আখ্যা দিয়েছেন। আর বিবাহ শুদ্ধ হলেই বৈধকারী হবে। কেননা ফাসিদ বা অকার্যকর বিবাহ বৈধ করতে পারে না। তবে যদি সহবাসের পর তালাক দেয়ার শর্ত করে নেয়, এ ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে। যদিও এ ক্ষেত্রে বিবাহ বাতিল বা অকার্যকর হওয়াটাই প্রকাশ্য।

‘আল্লামা তাক্বীউদ্দীন শুমুনী মিসরী (১৪৬৭ হিঃ) বলেনঃ মুহাল্লিলকে অভিশাপ দেয়ার কারণ হলো, সে বিচ্ছেদের ইচ্ছায় বিবাহ করেছে, অথচ বিবাহ স্থায়ী সম্পর্কের জন্যই শারী‘আতসিদ্ধ। সে এমনটি করে ভাড়া করা পাঠার ন্যায় হয়ে গেছে। আর যার জন্য বৈধ করা হচ্ছে তার ওপর অভিশাপের কারণ হলো, সে এর মাধ্যম হয়েছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - তিন তালাকপ্রাপ্তা রমণীর বর্ণনা

৩২৯৭-[৩] ইবনু মাজাহ (রহঃ) ’আলী, ইবনু ’আব্বাস ও ’উকবা ইবনু ’আমির (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।[1]

وَرَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ عَنْ عَلِيٍّ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَعقبَة بن عَامر

ورواه ابن ماجه عن علي وابن عباس وعقبة بن عامر

ব্যাখ্যা: মুসান্নিফ বলেনঃ ইবনু মাজাহ হাদীসটি ‘আলী, ইবনু ‘আব্বাস এবং ‘উকবা বিন ‘আমির থেকে বর্ণনা করেন।

ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ)-এর হাদীসটি ইবনু মাজাহ ছাড়াও ইমাম তিরমিযী, আবূ দাঊদ এবং নাসায়ী ‘আলী থেকে বর্ণনা করেন। ইমাম সুয়ূত্বী হাদীসটি আল জামি‘উস্ সগীরে উল্লেখ করে বলেন, ইমাম আহমাদ এবং চারজন অর্থাৎ সুনানে আর্বা‘আ-এর চার ইমাম হাদীসটি ‘আলী থেকে বর্ণনা করেন। তিরমিযী এবং নাসায়ী ইবনু মাস্‘ঊদ থেকে বর্ণনা করেন। তিরমিযী আবার জাবির থেকেও হাদীসটি বর্ণনা করেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - তিন তালাকপ্রাপ্তা রমণীর বর্ণনা

৩২৯৮-[৪] সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দশাধিক সাহাবীর সাক্ষাৎ পেয়েছি; তাঁদের প্রত্যেকেই ঈলাকারীকে অপেক্ষা করতে বলেন।(শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]

وَعَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ قَالَ: أَدْرَكْتُ بِضْعَةَ عَشَرَ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُلُّهُمْ يَقُولُ: يُوقَفُ الْمُؤْلِي. رَوَاهُ فِي شرح السّنة

وعن سليمان بن يسار قال ادركت بضعة عشر من اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم كلهم يقول يوقف المولي رواه في شرح السنة

ব্যাখ্যা: সুলায়মান ইবনু ইয়াসার। প্রখ্যাত তাবি‘ঈ এবং প্রসিদ্ধ সাত ফাকীহদের একজন।

(إيلاء) ‘ঈলা’ হচ্ছে কোনো ব্যক্তি চার মাস বা তার অধিক স্ত্রীর নিকট গমন না করার কসম করা। অতএব কোনো ব্যক্তি যদি স্ত্রীর সাথে ‘ঈলা’ করে তবে চার মাস পূর্বে তার নিকট গমন করবে না। গমন করলে সে কসম ভঙ্গকারী বলে গণ্য হবে এবং কসমের যে কাফফারা রয়েছে তাকে তা আদায় করতে হবে। এই অবস্থায় চার মাস পার হয়ে গেলে কি করবে- এ ব্যাপারে ‘আলিমদের মতানৈক্য রয়েছে। অধিকাংশ সাহাবীর মতে এভাবে চার মাস অতিক্রম করার কারণে স্ত্রীর ওপর তালাক পতিত হবে না। বরং তাদের বিষয়টি স্থগিত থাকবে। এমতাবস্থায় সে স্ত্রীকে গ্রহণ করে নিলে কাফফারা দিবে, গ্রহণের ইচ্ছা না থাকলে তালাক দিবে। স্ত্রীকে গ্রহণ করা বা তালাক দেয়া কোনটি না করলে কাযী এক ত্বলাকের মাধ্যমে তাদের বিবাহ বিচ্ছিন্ন করে দিবেন। ইমাম মালিক, ইমাম শাফি‘ঈ, ইমাম আহমাদ প্রমুখ (রহঃ) এই মত পোষণ করেন।
‘আলিমদের কারো কারো মতে চার মাসের ভিতর স্ত্রীকে গ্রহণ না করলে অটোমেটিক বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এক তালাক বায়্যিনাহ্ পতিত হয়ে যাবে। ইমাম সাওরী (রহঃ), ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) ও তাঁর অনুসারীরা এই মত পোষণ করেন। উভয়পক্ষই কুরআনে বর্ণিত ‘ঈলা’ সংক্রান্ত আয়াত দিয়ে দলীল পেশ করেন। ‘ঈলা’ সংক্রান্ত যে আয়াতটি কুরআনে বর্ণিত সেখানে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘যারা নিজেদের স্ত্রীদের নিকট গমন করবে না বলে কসম খেয়ে বসে তাদের জন্য চার মাসের অবকাশ রয়েছে, অতঃপর যদি পারস্পরিক সমঝোতা করে নেয়, তবে আল্লাহ ক্ষমাকারী দয়ালু। আর যদি তালাক দেয়ার সংকল্প করে নেয়, তাহলে নিশ্চয় আল্লাহ শ্রবণকারী ও জ্ঞানী।’’ (সূরা আল বাকারা ২ : ২২৭)

আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) ও তাঁর অনুসারীদের মতে, যদি বর্জনের সংকল্প করে অর্থাৎ চার মাসের ভিতর স্ত্রীকে গ্রহণ না করাই বর্জন বা ত্বলাকের সংকল্প। তাই চার মাসের ভিতর গ্রহণ না করলে চার মাস পার হতেই এক তালাক পতিত হয়ে বিবাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ‘আবদুর রাযযাক এবং ইবনু আবূ শায়বাহ্ তাদের মুসান্নাফে ‘উসমান, ‘আলী, ইবনু মাস্‘ঊদ, ইবনু ‘আব্বাস প্রমুখ সহাবা (রাঃ) থেকে চার মাস পার হয়ে গেলে এক তালাক হয়ে যাওয়ার মতটি বর্ণনা করেন। (মুসান্নাফ ‘আব্দুর রাযযাক, অধ্যায় : তালাক, অনুচ্ছেদ : চার মাস অতিক্রম হওয়া, হাঃ ৬/৪৫৩; মুসান্নাফ ইবনু আবূ শায়বাহ্, অধ্যায় : তালাক, অনুচ্ছেদ : যে ঈলা করল তার সম্পর্কে তারা যা বলেন, হাঃ ৫/১৪৪)

আর যারা বলেন চার মাস পার হলে বিষয়টি স্থগিত থাকবে তাদের মতে আয়াতের ব্যাখ্যা হলো, যদি চার মাস পার হওয়ার পর তালাক দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ইমাম বুখারী ইবনু ‘উমার থেকে বর্ণনা করেন,

إِذَا مَضَتْ أَرْبَعَةُ أَشْهُرٍ يُوقَفُ حَتّٰى يُطَلِّقَ وَلَا يَقَعُ عَلَيْهِا الطَّلَاقُ حَتّٰى يُطَلِّقَ وَيُذْكَرُ ذٰلِكَ عَنْ عُثْمَانَ وَعَلِيٍّ وَأَبِي الدَّرْدَاءِ وَعَائِشَةَ وَاثْنَيْ عَشَرَ رَجُلًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ ﷺ

‘‘যখন চার মাস অতিক্রম করবে তালাক না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। তালাক না দেয়া পর্যন্ত স্ত্রীর ওপর তালাক পতিত হবে না। ‘উসমান, ‘আলী, আবুদ্ দারদা, ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বারোজন সাহাবী থেকে এই মত বর্ণিত।’’ (সহীহুল বুখারী- অধ্যায় : তাফসীর, [لِّلَّذِينَ يُؤْلُونَ مِن نِّسَائِهِمْ] -এর ব্যাখ্যা অনুচ্ছেদ, হাঃ ৪৮৮১)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - তিন তালাকপ্রাপ্তা রমণীর বর্ণনা

৩২৯৯-[৫] আবূ সালামাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। নিশ্চয় সালমান ইবনু সখর, যাকে সালামাহ্ ইবনু সখর আল বায়াযী বলা হতো, তিনি রমাযান মাসে স্বীয় স্ত্রীকে নিজের মায়ের পিঠের মতো বলে ফেললেন, কিন্তু অর্ধেক রমাযানের পর এক রাতে তার সাথে সহবাস করে বসলেন। অতঃপর তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে এতদসম্পর্কে বর্ণনা করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, একটি ক্রীতদাস মুক্ত করে দাও। তিনি বললেন, আমার তো দাস নেই। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তবে বিরতিহীনভাবে দু’ মাস সওম পালন কর। তিনি বললেন, আমার এমন সামর্থ্য নেই। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তবে ষাটজন মিসকীনকে খাইয়ে দাও। তিনি বললেন, আমার এ ক্ষমতাও নেই। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফার্ওয়াহ্ ইবনু ’আমর -কে বললেন, তাকে ’আরক দান কর যাতে সে ষাটজন মিসকীনকে খাওয়াতে পারে।

عَرَقْ (’আরক) হলো (খেজুর পাতার প্রস্তুতকৃত) এক প্রকার ঝুড়ি, যেখানে ১৫ বা ১৬ সা’ পরিমাণ খেজুর ধরে। [উল্লেখ্য যে, এক সা’ = ৩ সের ৯ ছটাক, ১৫ সা’ = ১ মণ ১৩ সের ৭ ছটাক, ১৬ সা’ = ১ মণ ১৭ সের] (তিরমিযী)[1]

وَعَن أبي سلمةَ: أَنَّ سَلْمَانَ بْنَ صَخْرٍ وَيُقَالُ لَهُ: سَلَمَةُ بْنُ صَخْرٍ الْبَيَاضِيُّ جَعَلَ امْرَأَتَهُ عَلَيْهِ كَظَهْرِ أُمِّهِ حَتَّى يَمْضِيَ رَمَضَانُ فَلَمَّا مَضَى نِصْفٌ مِنْ رَمَضَانَ وَقَعَ عَلَيْهَا لَيْلًا فَأَتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَ لَهُ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعْتِقْ رَقَبَةً» قَالَ: لَا أَجِدُهَا قَالَ: «فَصُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ» قَالَ: لَا أَسْتَطِيعُ قَالَ: «أَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا» قَالَ: لَا أَجِدُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِفَرْوَةَ بْنِ عَمْرٍو: «أَعْطِهِ ذَلِكَ الْعَرَقَ» وَهُوَ مِكْتَلٌ يَأْخُذُ خَمْسَةَ عَشَرَ صَاعًا أَوْ سِتَّةَ عَشَرَ صَاعا «ليُطعِمَ سِتِّينَ مِسْكينا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن ابي سلمة ان سلمان بن صخر ويقال له سلمة بن صخر البياضي جعل امراته عليه كظهر امه حتى يمضي رمضان فلما مضى نصف من رمضان وقع عليها ليلا فاتى رسول الله صلى الله عليه وسلم فذكر له فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم اعتق رقبة قال لا اجدها قال فصم شهرين متتابعين قال لا استطيع قال اطعم ستين مسكينا قال لا اجد فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم لفروة بن عمرو اعطه ذلك العرق وهو مكتل ياخذ خمسة عشر صاعا او ستة عشر صاعا ليطعم ستين مسكينا رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: শারী‘আতের পরিভাষায় যিহার হলোঃ নিজ স্ত্রীকে বা স্ত্রীর এমন কোনো অঙ্গ যা দ্বারা পুরো শরীর উদ্দেশ্য হয়ে থাকে এমন কোনো অঙ্গকে চিরতরে বিবাহ হারাম কোনো মহিলার সাথে সাদৃশ্য উপস্থাপন করা। যেমন মা, বোন ইত্যাদি। ‘আরবরা যিহার করার সময় স্ত্রীকে মায়ের পিঠের সাথে তুলনা করে বলত (انْتِ عَلَيَّ كَظَهْرِ اُمِّيْ) অর্থাৎ তুমি আমার নিকট আমার মায়ের পিঠের মতো। উদ্দেশ্য হলো আমার মায়ের পিঠ যেমন আমার জন্য ব্যবহার করা হারাম ঠিক তুমিও আমার জন্য হারাম। এ থেকেই এভাবে স্ত্রীকে নিজের জন্য হারাম করা যিহার হিসেবে পরিচিত হয়। আইয়্যামে জাহিলিয়্যাতে কেউ স্ত্রিকে যিহার করলে স্ত্রী চিরতরে হারাম হয়ে যেত। খাওলা বিনতে সা‘লাবাহ্ নামক মহিলা সাহাবীর সাথে যিহারের ঘটনা ঘটলে কাফ্ফারার বিধান নাযিল হয়। (দেখুন ৫৮ নং সূরা আল মুজাদালাহ্ অবতীর্ণের শানে নুযূল)

(أَعْتِقْ رَقَبَةً) তুমি একজন দাস আযাদ করে দাও। এখান থেকে যিহারের বিধান বর্ণনা করা হচ্ছে। অর্থাৎ কেউ যিহার করে আবারো সেই স্ত্রীর সাথে বৈবাহিক জীবন যাপন করতে হলে তাকে কাফফারা স্বরূপ একটি দাস আযাদ বা মুক্ত করে দিতে হবে। হাদীসের ইবারতের বাহযত থেকে প্রতীয়মান হলো, দাস ঈমানদার বা মুসলিম হওয়া আবশ্যক নয়। যে কোনো একটি দাস বা দাসী স্বাধীন করে দিলেই কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। ইমাম ‘আত্বা, নাখ‘ঈ, আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) এই মত পোষণ করেন। অপরদিকে ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ ও অন্যদের নিকট কাফির দাস বা দাসী স্বাধীন করলে কাফফারা আদায় হবে না। কুরআনে হত্যার কাফফারা ঈমানদার দাস বা দাসী দিয়ে আদায় করতে বলা হয়েছে। তাই এখানে ঈমানের শর্ত না থাকলেও অন্য আয়াত দ্বারা এ আয়াতটিও শর্তযুক্ত হয়ে যাবে। এর উত্তর এই দেয়া হয় যে, এক হুকুমকে অন্য আরেকটির হুকুম দিয়ে শর্তযুক্ত করা যায় না। অর্থাৎ কুরআনে হত্যার কাফ্ফারার ক্ষেত্রে ঈমানদার দাসের শর্ত করা হয়েছে। তাই এ হুকুম এই শর্তের সাথে যুক্ত থাকবে। অপরদিকে যিহারের কাফ্ফারায় ঈমানের শর্ত করা হয়নি। তাই যিহারের হুকুম এই শর্তমুক্ত থাকবে। কুরআনের এক হুকুমকে আরেক হুকুমের শর্ত দিয়ে শর্তযুক্ত করলে কুরআনের শর্তমুক্ত বিধানকে শর্তযুক্ত করে দেয়া হবে, যা শুদ্ধ নয়। তবে ইমাম শাফি‘ঈ-এর মত মু‘আবিয়াহ্ থেকে বর্ণিত একটি হাদীস দ্বারা সমর্থিত হয়। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তার একটি দাসী আযাদ করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন, যা আদায় করা তার ওপর করণীয় ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই দাসীকে প্রশ্ন করেন, «أَيْنَ اللّٰهُ قَالَتْ فِي السَّمَاءِ قَالَ مَنْ أَنَا قَالَتْ أَنْتَ رَسُولُ اللّٰهِ قَالَ أَعْتِقْهَا فَإِنَّهَا مُؤْمِنَةٌ» ‘‘আল্লাহ কোথায়? সে বললো, আসমানে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি কে? সে বললো, আপনি আল্লাহ তা‘আলার রসূল। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আযাদ করে দাও; কেননা সে মু’মিনাহ্।’’ (সহীহ মুসলিম- অধ্যায় : মসজিদ ও সালাতের স্থান, অনুচ্ছেদ : সালাতের মাঝে কথা হারাম... হাঃ ৮৩৬)

(فَصُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ) ধারাবাহিক দুই মাস সওম পালন কর। যিহারের কাফ্ফারার দ্বিতীয় বিধান। অর্থাৎ যে ব্যক্তি দাস আযাদ করতে অপারগ হবে সে দুই মাস ধারাবাহিক সওম পালন করবে। দুই মাস সওম পালনের মাঝে কোনো বিরতি দেয়া যাবে না। একদিন সওম পালন না করলেই আবার তাকে পুনরায় সওম শুরু করে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দুই মাস সওম পালন করতে হবে।

(أَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا) ষাট মিসকীনকে খাবার দাও। যিহারের কাফ্ফারার তৃতীয় বিধান। অর্থাৎ সওম পালনে অপারগ হলে ষাট জন মিসকীনকে এক বেলা খাবার দিবে। প্রশ্নকারী সওম পালনে অপারগতা প্রকাশ করায় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এই হুকুম দেন। মিসকীনের সংখ্যা ষাট পূর্ণ হতে হবে নাকি এর কম সংখ্যায় ষাটবার খাবার দিলে চলবে এ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কুরআন বা হাদীসের বাহ্যিক অর্থ হিসেবে ষাট সংখ্যা পূর্ণ করা জরুরী বলে মনে করেন ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ আরো অনেকে। অপরদিকে ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) ও তার অনুসারীদের মতে একজনকে ষাট দিন খাবার প্রদান করলেও আদায় হয়ে যাবে। এক মিসকীন তার প্রতিদিনের প্রয়োজন হিসেবে পরের দিন নতুন মিসকীন বলে গণ্য হবে।

(أَعْطِه ذٰلِكَ الْعَرَقَ) তাকে ঐ ‘আর্ক্বটি দিয়ে দাও। ‘আরাক বা ‘আর্ক্ব পরিমাপের একটি পাত্র। হাদীসের বর্ণনাকারীর মতে যে পাত্রে ১৫ বা ১৬ সা‘ খেজুর সংকুলান। এর আলোকে ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর মতে একজন মিসকীনকে এক মুদ্দ তথা এক সা‘-এর চার ভাগের এক ভাগ খাবার দান করে দিলে চলবে। অপরদিকে ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর মতে প্রত্যেক মিসকীনকে একটি ফিতরার পরিমাণ অর্থাৎ খেজুর, ভুট্টা, যব, কিশমিশ হলে এক সা‘ আর গম হলে অর্ধ সা‘ পরিমাণ দিতে হবে। আবূ দাঊদ-এর বর্ণনা দিয়ে এই মতের পক্ষে দলীল দেয়া হয়। কেননা আবূ দাঊদ-এর বর্ণনায় রয়েছে, (فَأَطْعِمْ وَسْقًا مِنْ تَمْرٍ بَيْنَ سِتِّينَ مِسْكِينًا) অর্থাৎ তুমি এক ওয়াসাক খেজুর ষাটজন মিসকীনকে খাবার প্রদান কর। এক ওয়াসাক সমান ষাট সা‘। অতএব প্রত্যেক মিসকীনকে এক সা‘ করে প্রদান করতে হবে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১২০০; মিরকাতুল মাফাতীহ :৪০৯-১০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - তিন তালাকপ্রাপ্তা রমণীর বর্ণনা

৩৩০০-[৬] আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ ও দারিমী সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (রহঃ) হতে, তিনি সালামাহ্ ইবনু সখর হতে অনুরূপ বর্ণনা করেন। সালামাহ্ বলেন, আমি নারীদের কাছে এত অধিক গমন করতাম যা অন্যদের দেখা যেত না। আবার আবূ দাঊদ এবং দারিমী-এর বর্ণনায় রয়েছে, তাহলে তুমি এক ওয়াসাক খেজুর ষাট মিসকীনের মধ্যে বিলিয়ে দিতে পার (এক ওয়াসাক ষাট সা’ পরিমাণ)।[1]

وروى أَبُو دَاوُد وابنُ مَاجَه والدارمي عَن سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ صَخْرٍ نحوَه قَالَ: كنتُ امْرأ أُصِيبُ مِنَ النِّسَاءِ مَا لَا يُصِيبُ غَيْرِي وَفِي روايتهِما أَعنِي أَبُو دَاوُدَ وَالدَّارِمِيَّ: «فَأَطْعِمْ وَسْقًا مِنْ تَمْرٍ بَيْنَ سِتِّينَ مِسْكينا»

وروى ابو داود وابن ماجه والدارمي عن سليمان بن يسار عن سلمة بن صخر نحوه قال كنت امرا اصيب من النساء ما لا يصيب غيري وفي روايتهما اعني ابو داود والدارمي فاطعم وسقا من تمر بين ستين مسكينا

ব্যাখ্যা: (أصيب من النساء ما لا يصيب غيري) অর্থাৎ আমি মেয়েদের থেকে এমন জিনিস লাভ করতে পারি যা অন্যরা পারে না। এ কথা বলে সহবাসের সামর্থ্যের দিকে ইঙ্গিত করছেন। অর্থাৎ সহবাস ছাড়া থাকা আমার জন্য অধিক কষ্টকর।

হাদীসটি ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর মতের পক্ষে দলীল, যার আলোচনা উপরের হাদীসের ব্যাখ্যায় করা হয়েছে। এক ওয়াসাক সমান ষাট সা‘। অতএব প্রত্যেক মিসকিনকে এক সা‘ খেজুর প্রদান করবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage

পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - তিন তালাকপ্রাপ্তা রমণীর বর্ণনা

৩৩০১-[৭] সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (রহঃ) সালামাহ্ ইবনু সাখর (রাঃ) হতে। আর তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, যদি যিহারকারী কাফফারা দেয়ার পূর্বে সহবাস করে, তার প্রতিও একটি কাফফারা দিতে হবে। (তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ صَخْرٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْمُظَاهِرِ يُوَاقِعُ قَبْلَ أَنْ يُكَفِّرَ قَالَ: «كَفَّارَة وَاحِدَة» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه

وعن سليمان بن يسار عن سلمة بن صخر عن النبي صلى الله عليه وسلم في المظاهر يواقع قبل ان يكفر قال كفارة واحدة رواه الترمذي وابن ماجه

ব্যাখ্যা: মুযাহির ব্যক্তি অর্থাৎ যে তার স্ত্রীর সাথে যিহার করেছে সে উক্ত স্ত্রীকে নিয়ে বৈবাহিক জীবন-যাপন করতে হলে তাকে কাফফারা দিতে হয়। যার আলোচনা ওপরে হয়েছে। সহবাসের পূর্বেই তাকে কাফফারা আদায় করতে হয়। যিহারের কাফফারা আদায় করার পর সে তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করবে। তবে কেউ যদি কাফফারা না দিয়েই সহবাস করে ফেলে তবে তাকে যিহারের কাফফারা ছাড়াও কাফফারা দেয়ার পূর্বে সহবাসের কারণে অতিরিক্ত আরেকটি কাফফারা দিতে হবে। বর্ণিত হাদীসে এই বিধানের কথাই বলা হয়েছে। এই হাদীসের আলোকে অধিকাংশ ‘আলিম এই মতই পোষণ করেন যে, কেউ যিহারের কাফফারা আদায়ের পূর্বে স্ত্রীর সাথে কাম পুরো করার কাজে লিপ্ত হলে তাকে যিহারের কাফফারা ছাড়াও আরেকটি অতিরিক্ত কাফফারা দিতে হবে। ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ, আহমাদ প্রমুখ (রহঃ) এই মত পোষণ করেন। অপরদিকে হানাফী ‘আলিমদের মতে যিহারের কাফফারা আদায়ের পূর্বে স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেললে সে গুনাহ করল। এজন্য তাকে আল্লাহ তা‘আলার কাছে তাওবাহ করতে হবে। কিন্তু প্রথম কাফফারা অর্থাৎ যিহারের মূল কাফফারা ছাড়া অন্য কোনো কাফফারা ওয়াজিব হবে না। তবে যিহারের কাফফারা প্রদান না করা পর্যন্ত সহবাসের পুনরাবৃত্তি করবে না।

ইমাম মালিক (রহঃ)-এর মত অধিকাংশের ‘আলিমের মতের সাথে উল্লেখ করলেও মুয়াত্ত্বায় রয়েছে,

ومن تظاهر من امرأته ثم مسها قبل ان يكفر ليس عليه الا كفارة واحدة ويكف عنها حتى يكفر وليستغفر الله وذلك أحسن ما سمعت.

‘‘যে তার স্ত্রীর সাথে যিহার করবে, তারপর যিহারের কাফফারা আদায়ের পূর্বেই স্ত্রীর সহবাস করে ফেলে তবে তার ওপর একটি কাফফারা ছাড়া অন্য কিছু নেই। তবে সে কাফফারা দেয়া পর্যন্ত বিরত থাকবে এবং আল্লাহ তা‘আলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। এ ব্যাপারে আমি যা মতামত শুনেছি এটাই সর্বোত্তম।’’ (মুয়াত্ত্বা মালিক, অধ্যায় : তালাক, অনুচ্ছেদ : স্বাধীন ব্যক্তির যিহার, হাঃ ১১৬৭)

এখানে আরো দু’টি মত রয়েছে। ‘আবদুর রাহমান ইবনু মাহদীর নিকট যিহারের কাফফারার পূর্বে সহবাস করলে দু’টি কাফফারা প্রদান করতে হবে। ‘আমর ইবনুল ‘আস, কাবীসাহ্, সা‘ঈদ ইবনু জুবায়র, যুহরী এবং কাতাদাহ (রহঃ) থেকে এই মতটি বর্ণনা করা হয়। আবার হাসান বাসারী, নাখ‘ঈ (রহঃ) থেকে তিনটি কাফফারা ওয়াজিব হওয়ার বিবরণ রয়েছে। তবে বর্ণিত হাদীসটি সবার বিরুদ্ধে দলীল। অর্থাৎ মুযাহির ব্যক্তি যিহারের কাফফারা আদায়ের পূর্বে সহবাস করে নিলে তাকে যিহারের কাফফারা ছাড়া আরো একটি কাফফারা আদায় করতে হবে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১১৯৮; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح) 13. Marriage
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে